• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

করোনার মধ্যেও বাড়ছে আমদানি-রপ্তানি

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০২০  

করোনার দুঃসময়েও আশার আলো দেখাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতির চাকাটা এখনও ভালোভাবে চালু রেখেছে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর। করোনাকালে বন্ধ হয়নি এক দিনের জন্যও। কনটেইনার ও জাহাজজট তৈরি হলেও তাও সামাল দিয়েছে দক্ষতার সঙ্গে। আমদানি-রপ্তানির গ্রাফটা মাঝখানে কিছুটা নিম্নগামী হলেও এখন আবার ঊর্ধ্বমুখী। এদিকে, করোনার ধকল সামলে সর্বশেষ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসও সরকারকে রাজস্ব দিয়েছে ৪১ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা পণ্যের শুল্ক্কায়ন করেই এ রাজস্ব আদায় করেছে কাস্টম হাউস।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'করোনার মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর সচল ছিল প্রতিদিন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আমরা এ সময় কিছু কৌশলও নিয়েছিলাম। পণ্য খালাসে উৎসাহিত করতে ভাড়া মওকুফ করেছি। ডিপোতে পণ্য পাঠিয়ে ইয়ার্ডে পর্যাপ্ত খালি জায়গা নিশ্চিত করেছি। কনটেইনার জাহাজে অপেক্ষমাণ সময় যাতে না বাড়ে, সে জন্য বিকল্প পদ্ধতিতে জেটির সংখ্যা বাড়িয়েছি। এটির প্রভাবে স্বাভাবিক ছিল খালাস প্রক্রিয়া। আর আমদানি-রপ্তানির চিত্র স্বাভাবিক আছে ব্যবসায়ীরা এলসি খোলায়। আমদানি-রপ্তানি মাঝখানে কিছুটা কমলেও এখন সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছে ধীরে ধীরে।'

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ ছয় মাস ছিল করোনার প্রভাব। চীনে করোনা শনাক্ত হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। এ কারণে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত করোনায় বিপর্যস্ত ছিল পুরো বিশ্ব। মন্দা ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যেও। তারপরও সর্বশেষ এই অর্থবছরে ১০ কোটি ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ২৭২ টন কার্গো পণ্য ওঠানামা হয়েছে বন্দরে। এর আগের অর্থবছরে যা ছিল ৯ কোটি ৮২ লাখ ৪০ হাজার ৬৫৫ টন। এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে এ বন্দর ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে ৩০ লাখ চার হাজার ১৪২ টিইইউস। আগের অর্থবছরে যা ছিল ২৯ লাখ ১৯ হাজার ২৩ টিইইউস। এখানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯ শতাংশ।

করোনার কারণে চীন থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ ছিল দীর্ঘ সময়। তারপরও সর্বশেষ অর্থবছরে বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে তিন হাজার ৭৬৪টি। আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যা ছিল দুই হাজার ৬৯৯টি। এখানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে হয়েছে ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

করোনার দুঃসময়েও বন্দরে এমন ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চিটাগং চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতার কারণেই সচল আছে দেশের অর্থনীতির চাকা। এমন সাফল্যের জন্য বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ ধন্যবাদ জানাই। সঙ্গে সঙ্গে ধন্যবাদ দিচ্ছি মেইন লাইন অপারেটর, শিপিং এজেন্ট, টার্মিনাল অপারেটর, বার্থ অপারেটর, শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ বিভিন্ন পর্যায়ের আমদানিকারক-রপ্তানিকারকদেরও।'

এদিকে, বন্দরে পণ্য খালাস স্বাভাবিক থাকায় বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও ৪১ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। টার্গেটের তুলনায় কম আদায় হয়েছে ১৬ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। শতাংশের হিসাবে এটি ২৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আবার গত অর্থবছরের তুলনায়ও এবার প্রায় এক হাজার ৮১০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে। তারপরও এটিকে সফলতা ভাবছেন দায়িত্বশীলরা। কারণ, করোনার কারণে আমদানি-রপ্তানি কম থাকার প্রভাব পড়েছে কাস্টম হাউসেও। বন্দর দিয়ে যা পণ্য আসে, সেটিরই শুল্ক্কায়ন করে তারা। বন্দরের প্রভাব তাই স্বাভাবিকভাবে পড়ে কাস্টম হাউসেও।

কাস্টম হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম বলেন, 'করোনার প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাজারে। জ্বালানি তেলসহ প্রায় সব পণ্যের দামও কমে গেছে। এ কারণে অনেক পণ্যের শুল্ক্কহারও কমেছে। আবার সাধারণ ছুটির কারণে কয়েক দিন আমদানি চালানের বিল অব এন্ট্রি জমা পড়েনি, শুল্ক্কায়ন হয়নি, রাজস্বও জমা হয়নি। উচ্চশুল্ক্ক কিংবা বিলাসবহুল পণ্যছাড়ের পরিমাণও কম ছিল এবার। তারপরও যা রাজস্ব পেয়েছি, তা টার্গেটের তুলনায় কম হলেও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি।'

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা