• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

শেখ কামাল ক্লাব কাপের ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনী

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০১৯  

স্টেডিয়ামের হাজার বিশেক দর্শককে আবেগের রোলার কোস্টারে চড়িয়ে অবশেষে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের ফাইনালেই উঠে গেল চট্টগ্রাম আবাহনী। ভারতের দল গোকুলাম কেরালার বিপক্ষে দুই দুইবার পিছিয়ে পড়া ম্যাচে সমতায় ফিরিয়ে অবশেষে ৩-২ গোলে জিতে মাঠ ছেড়েছে মারুফুল হকের দল। বসুন্ধরা কিংসের বিদায়ের পর আন্তর্জাতিক এই আসরের শিরোপা লড়াইয়ে দেশের একটি দলের প্রতিনিধিত্ব থাকতে এই জয়টা যে ভীষণ প্রয়োজনই ছিল। সেই স্বপ্নটা বাঁচিয়ে রাখল চট্টগ্রাম আবাহনী। 

ম্যাচের প্রথমার্ধেই পিছিয়ে পড়েছিল তারা। শুরু থেকে দুই দলই খেলছিল সতর্ক ফুটবল। ৪-৩-৩-এ খেলছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। মানিক হোসেনকে একক পিভোট রেখে দিদিয়েরের সঙ্গে জামালকে এদিন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডারের ভূমিকায় খেলাচ্ছিলেন মারুফুল হক। জামাল দ্বিতীয় ম্যাচে এই ভূমিকায় অ্যাসিস্ট ও গোলে ছিলেন ম্যাচসেরা। তার পরও এটা তাঁর অভ্যস্ত পজিশন নয়। গোকুলামের বিপক্ষে সেই জড়তা তাঁর খেলায় ছিল। ভারতীয় দলটি খেলছিল ৩-৫-২-এ। তাতে মিডফিল্ডে তাদেরও তিনজন। তবে দুজন পেছনে, সামনে নাথানিয়েল গার্সিয়া। ওপরে দুই স্ট্রাইকার জোসেফ ও হেনরি কিসেককা। ফলে আক্রমণে তারাও খুব খেলোয়াড় জড়ো করতে পারছিল না প্রতিপক্ষ বক্সের সামনে। এ অবস্থায় ম্যাচে গতি বদলাতে ব্যক্তিগত ঝলক প্রয়োজন ছিল। চট্টগ্রাম আবাহনীর স্ট্রাইকার লুকা রোতকোভিচ বক্সের মুখে বেশ কিছু  বল পেয়েও সেই ঝলক দেখাতে ব্যর্থ। অন্য প্রান্তে কিসেককা কিন্তু তা দেখিয়ে ফেলেন। জোসেফ নিচে নেমে এসে তাঁকে থ্রু পাস ছেড়েছিলেন। কিসেককা আবাহনীর উজবেক স্টপার ইকবল জনকে কাটিয়ে ভেতরে ঢুকে গেলে রিয়াদও এসে থামাতে পারেননি তাঁকে। দেখে শুনে প্লেস করেন গোকুলাম স্ট্রাইকার। এই এক গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় গোকুলাম। 

অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই সমতায় ফিরে চট্টগ্রাম আবাহনী। ডান দিক থেকে রহমতের বাড়ানো একটি লং বল ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেনি গোকুলাম স্টপার আন্দ্রে দেনিস। বাঁ দিকে বল পেয়ে যান আরিফুর রহমান। কয়েক গজ ড্রিবল করেই তাঁর ডান দিকের দুই স্টপারের মাঝ দিয়ে বল ছাড়েন, দ্রুত গতির চার্লস দিদিয়ের সেই সুযোগটাই কাজে লাগান। গোকুলাম গোলরক্ষকও যেন ছিলেন কিছুটা অপ্রস্তুত। দিদিয়েরকে থামাতে বাঁ দিকে তিনি এগিয়ে এলে চট্টগ্রাম আবাহনী মিডফিল্ডার দারুণ নিশানায় প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দেন। এরপর ১-১ সমতাতেই এগোচ্ছিল ম্যাচ। ৭৯ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনীর অর্ধে ইয়াসিন আরাফাতের পা থেকে বল কেড়ে গোকুলাম মিডফিল্ডার মোহাম্মদ রশিদ দ্বিতীয় গোলের প্লট তৈরি করে ফেলেন। বক্সের মুখে তাঁর থ্রু পাস ধরেই মুহূর্তের মধ্যে কিসেককা বামে বল ছেড়েছেন জোসেফকে। গোকুলাম স্ট্রাইকার দুরূহ কোণ থেকে বাঁ পায়ের চমৎকার শটে বল জালে জড়িয়ে দিয়েছেন। ম্যাচের ২০ মিনিট বাকি থাকতে আবারও কোচ মারুফুল আরিফুর রহমানের জায়গায় কাওসার আলী রাব্বী এবং স্ট্রাইকার লুকাকের বদলে ফেলে মাঠে নামান মিডফিল্ডার সোহেল রানাকে। দিদিয়েরের জায়গায় খেলেন সোহেল, দিদিয়ের উঠে যান ওপরে। মারুফ এই বদলের সঙ্গে সঙ্গেই ফল পান। বাঁ দিকে বল ধরেই দ্রুতগতিতে ওপরে উঠে সোহেলের কাট ব্যাক, ঠিক বক্সের মাঝখান থেকে সেই বলেই পা চালিয়ে স্বাগতিকদের ম্যাচে রাখেন দিদিয়ের। শেষ পর্যন্ত খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের সময়ের প্রথমার্ধেই ম্যাচ ৩-২ করে ফেলেন মারুফের অন্যতম সেরা অস্ত্র চিনেডু। বাঁ দিক থেকে কাওসার আলীর ক্রসে ডি বক্সের ফাঁকায় থেকে প্রথম শটে গোলরক্ষককে হারাতে পারেননি, তবে ফিরতি বলে ডাইভিং হেডে তিনিই আবার বল জালে জড়িয়ে দিয়েছেন। বাকিটা সময়ে এই স্কোরলাইন ধরে রাখতে পারলে জয়সূচক গোলই হয়ে যায় সেটি। লিড ধরে রাখতে মারুফ জামালকে উঠিয়ে আরেক বিদেশি স্টপার প্ল্যান পিটারকেও নামিয়েছেন ইকবল আর রিয়াদুলের পাশে। এই ডিফেন্স শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচিয়েছেও।

 

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা