• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

ভাঙছে শরিক দল, সঙ্কটে ঐক্যফ্রন্ট

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৯  

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তার নিজ দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুসহ কয়েকজন দল ছেড়ে গেছেন৷ আর ফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।

অন্যদিকে বিএনপির অনেক শীর্ষ নেতাও কামাল হোসেনকে মানতে চাইছেন না। এসব মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন বেকায়দায় পড়েছেন এবং ফ্রন্টও সংকটের মধ্যে পড়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্তির ঘোষণা না দিলেও বিএনপি কৌশলগতভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে এড়িয়ে চলবে। এর অংশ হিসেবে ড. কামাল হোসেনের অফিসে ফ্রন্টের সর্বশেষ বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রতিবাদ সভার প্রস্তাব করেন। এসময় তার কথার বিরোধিতা করে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রুত চৌধুরী বলেন, ছোটখাটো সভা করে কী লাভ। এর প্রতি উত্তরে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, যা করতে পারবেন, তাই আগে করুন। এনিয়ে তাদের মধ্যে দুই-তিন মিনিট তর্ক-বিতর্ক হয় বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক শীর্ষ নেতা  বলেন, একাদশ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন পেতে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবীদের নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে বিএনপি। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনের পরে বুঝতে পেরেছে যে, ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে কোনো লাভ হয়নি। বরং দলের ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনের পরে বিএনপির তৈরি করা মঞ্চে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা তাদের বিপক্ষে বক্তব্যে দিচ্ছেন। এসব কথা মাথায় নিয়ে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে তারা আর সামনে এগুবো না। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্তিও করবে না।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দির সরকার বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তো এখনো ভাঙেনি। আর কৌশলগতও কিছু নাই। কারণ বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আর আমরা কিছু না করলে তো ওদের দিয়ে কিছু সম্ভব না। সুতরাং এর একটি অন্যরকম রোল হবে।

এবিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি একটি শক্তি। কারণ বিএনপি জনগণের কথা বলে। আর বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তার মুক্তি নিয়ে যাদেরকে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) নিয়ে আমরা চলি, তাদের মধ্যে যদি অনীহা থাকে তাহলে তো তাদের সাথে দীর্ঘ পথ চলা ক্ষতিকর। যারা (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) আছে তাদেরকে সম্মান করি ও গুরুত্ব দিই। কিন্তু তারা যদি আমাদের ঘাড়ে চেপে তাদের নিজস্ব টার্গেট নিয়ে চলতে চায়, সেই পথে চলা তাহলে আমাদের জন্য বোকামি হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি জন্য তাদেরকে (কামাল হোসেন) কেনো মঞ্চে চিরকুট দিতে হবে? বেগম জিয়ার মুক্তির কথা তারা কেন বলতে পারবে না? একারণে আমি মনে করি, সবাইকে একটু সতর্ক হওয়া ভালো।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ উদ্যোক্তা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এবিষয়ে আমি কিছু জানি না। সুব্রুত চৌধুরীকে জিজ্ঞেস করুন, উনি বলতে পারবেন।

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রুত চৌধুরী বলেন, ঐক্যফ্রন্ট আছে। আর আমরা সবাই আমাদের দল গোছাতে ব্যস্ত।

এদিকে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল জেএসডিও ভাঙনের মুখে পড়েছে। দলটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতনসহ আরো কয়েকজন শীর্ষ নেতা জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বের গঠিত দল ত্যাগ করে নতুন দল সৃষ্টি করার ঘোষণা দিয়েছেন। আর ভাঙা-গড়ার চাপে আছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোও।

এবিষয়ে আব্দুল মালেক রতন বলেন, আ স ম আবদুর বর তার মূল আর্দশ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। তাই জেএসডির মূল চিন্তা-চেতনা ও আর্দশ নিয়ে আমরা জেএসডি করবো।

অপরদিকে ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে গেছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ। আর বর্তমানে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির তালিকা প্রকাশের পর থেকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ভাঙনের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

এবিষয়ে এলডিপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, সেবিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। তবে আমার অবস্থান অবশ্যই জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষেই থাকবে।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা