• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

মাকে মেরে দুই হাত ভেঙে দিলো ব্যাংকার ছেলে

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৬ মে ২০২২  

বসতবাড়ির জমি লিখে না দেওয়ায় ৮০ বছর বয়সী মাকে মারধর করে দুই হাত ভেঙে দিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তা ছেলে ও তার স্ত্রী। নির্যাতনের শিকার নারীকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার হাত, পা ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতের যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে রাজীব আলী ডনকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। রাজীব আলী ডন ন্যাশনাল ব্যাংক নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। তার স্ত্রী খালেদা বেগম গৃহিণী।
ঈদের দিন মঙ্গলবার (৩ মে) রাত ৮টার সময় দিনাজপুর শহরের বড় বন্দর নতুন পাড়া মহল্লার বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে। নির্যাতনের শিকার মা রেজিয়া খাতুন প্রাইমারি স্কুলের সাবেক শিক্ষক ছিলেন। তিনি বড়বন্দর নতুন পাড়া মহল্লার মৃত বাহার আলীর স্ত্রী। তার স্বামীও দিনাজপুর জিলা স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
মামলা, ভুক্তভোগী ও স্বজনদের দেওয়া তথ্যের মাধ্যমে জানা গেছে, রেজিয়া বেগমের দুই ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে মারা গেছেন। স্বামীও গত হয়েছেন অনেক আগে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট ছেলে রাজীব আলী ডন ব্যাংক কর্মকর্তা। ছোট ছেলে ও বড় ছেলের রেখে যাওয়া এক সন্তানকে নিয়ে বড়বন্দর নতুন পাড়ায় বসবাস করেন তিনি। বেশ কিছুদিন থেকেই ছেলে মায়ের কাছে বসতবাড়ির ১৬ শতাংশ জমি লিখে নিতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু মা তাতে রাজি হচ্ছিলেন না। একসময়ে ছেলের জেদাজেদি ও নির্যাতনের কারণে তিন শতাংশ জমি লিখে দেন। কিন্তু সম্পূর্ণ জমিই লিখে নেওয়ার জেদ ছাড়েননি। বাকি জমি লিখে না দেওয়ায় নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। গত ১৯ রমজান মাকে নির্যাতন করেন। সেদিন পরিবারের লোকজন ও পুলিশের সমঝোতায় ছাড় পান তিনি। ঈদের দিন রাত ৮টার সময় ছেলে ও তার স্ত্রী মিলে রেজিয়া বেগমকে বাকি জমি লিখে দিতে চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় তারা অমানবিক নির্যাতন করেন। চলাফেরার সাহায্যে ব্যবহার করা লাঠি কেড়ে নিয়ে সেই লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করেন এবং লাথি মেরে মেঝেতে ফেলে দেন। হাত, পা, পিঠ, পেটসহ শরীরের সমস্ত স্থানেই আঘাত করা হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে একপর্যায়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আবারও বাইর থেকে বাড়িতে এনে নির্যাতন অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে তিনি কান্নাকাটি শুরু করেন। এ সময় বড় ছেলের সন্তান (নাতি) লিমান ফুফুদেরকে খবর দেয়। তারা ও এলাকাবাসী এসে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। নির্যাতনের ফলে দুই হাত ভেঙে গেছে। মাথায় আঘাত পেয়েছেন, হাতে ও পায়ে ক্ষত হয়েছে।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘ওই ছেলে থানায় এসেছিল, মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দিতে। কিন্তু পুলিশ মাকে মারধরের বিষয়টি জানার পর তাকে আটক করে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দিলে ওই মামলায় আসামি করে আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে।’

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা