• মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

  • || ০৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

খোঁজ মিলল ১৬৬ বছরের পুরোনো জুতার

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১ অক্টোবর ২০২৩  

জুতা ছাড়া আজকের মানুষ অচল। কিন্তু শুধু এ যুগেই নয়, সেই প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ জুতা পরছে। এমন পুরনো জুতার নিদর্শন মাঝেমাঝেই খুঁজে পাওয়া যায়। এবার পাওয়া গেল ছয় হাজার বছর আগের জুতা। যাকে ইউরোপের সবচেয়ে পুরনো জুতা বলছেন গবেষকরা।

সিএনএনের এক প্রতিবেদন মতে, স্পেনের একটি গুহায় ২২টি তথা ১১ জোড়া জুতা পাওয়া গেছে। জুতাগুলো একজাতীয় ঘাসের তন্তু দিয়ে বোনা যা অনেকটা পাটের আঁশের মতো। জুতা বলা হলেও এগুলো দেখতে আজকের দিনের স্যান্ডেলের মতো। রেডিওকার্বন বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, জুতাগুলো ছয় হাজার বছরের পুরনো।

জুতাগুলো প্রথম আবিষ্কার হয় স্পেনের একটি গুহায় ১৮৫৭ সালে অর্থাৎ এখন থেকে ১৬৬ বছর আগে। এরপর খনিশ্রমিকরা স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলের ওই ‍গুহাটি লুট করে। তারা শুধু জুতাই নয়, ঝুড়ি ও অন্যান্য জিনিস নিয়ে যায়। 

খনিশ্রমিকদের লুটের প্রায় ১০ বছর পর ওই গুহাটি পরিদর্শন করেন স্পেনের প্রত্নতাত্ত্বিক ম্যানুয়েল ডা গঙ্গোরা। সেই সময় তিনি সেখানে জুতা-স্যান্ডেলসহ আরও বেশ কিছু জিনিস খুঁজে পান এবং সেগুলো সংগ্রহ করে মাদ্রিদ ও গ্রানাডার জাদুঘরে দান করেন। এগুলো নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। ১৯৭০-এর দশকে এই জুতাগুলো ৫ হাজার বছর আগের বলে জানানো হয়।

সম্প্রতি এগুলো নিয়ে গবেষণা শুরু করে স্পেনের অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অফ বার্সেলোনা ও আলকালা ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। তাদের গবেষণায় জানা গেছে, এগুলো আরও অন্তত ১ হাজার বছর আগের তথা ছয় হাজার বছরের পুরনো। 

 

জুতা-স্যান্ডেলের পাশাপাশি গুহায় ঝুড়ি, কাঠের সরঞ্জাম ও অন্যান্য জিনিসপত্র পাওয়া যায়। ছবি- সংগৃহীত

কিন্তু ঘাসের তন্তু দিয়ে তৈরি জুতাগুলো কিভাবে এত বছর পরও অক্ষত-এমন প্রশ্নের জবাবে গবেষকরা বলছেন, গুহার ভেতরের শুষ্ক পরিবেশ ছিল পচনশীল বস্তু সংরক্ষণের জন্য একটা আদর্শ স্থান। ফলে ঝুড়ি, কাঠের সরঞ্জাম, স্যান্ডেল ও অন্যান্য জিনিসপত্রের পাশাপাশি আংশিকভাবে মমি করা মৃতদেহও সেখানে সংরক্ষণ করা হয়েছিল।

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য মারিয়া হেরেরো ওতাল বলছেন, জুতাগুলো এখন পর্যন্ত জানা মতে দক্ষিণ ইউরোপে উদ্ভিদ তন্তু দিয়ে তৈরি সামগ্রীর সবচেয়ে পুরনো ও ভালোভাবে সংরক্ষিত নমুনা। তিনি বলেন, উপকরণগুলোর কারিগরি বৈচিত্র্য ও কাঁচামালের ব্যবহারের ধরন সংশ্লিষ্ট প্রাগৈতিহাসিক জনগোষ্ঠীর দক্ষতাই প্রমাণ করে।

গবেষকদের মতে, জুতাগুলো ঘাসের তন্তু ছাড়াও চামড়া, চুন ও রেমি বাস্ট নামে এক ধরনের প্রাকৃতিক আঁশসহ আরও কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। প্রত্মতাত্ত্বিক গঙ্গোরার দেয়া বর্ণনা ব্যবহার গবেষকরা হাইপোথিসিস তথা পূর্বানুমান করেন যে, গুহায় সমাধিস্থ আংশিক মমা করা মরদেহের পায়ে জুতাগুলো পরানো হয়েছিল।

কিছু জুতায় স্পষ্ট চিহ্ন ছিল যে, সেগুলো পরা হয়েছিল। তবে এমন কিছু জুতা রয়েছে যা কখনই পরা হয়নি বলেই মনে হয়। জুতাগুলোর পাশাপাশি গবেষকরা গুহায় পাওয়া ঝুড়ি ও কাঠের তৈরি কিছু জিনিস নিয়েও গবেষণা করেছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, গুহায় পাওয়া ৭৬টি বস্তু আগে যা ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়ে আরও প্রায় ২০০০ বছরের বেশি পুরনো। এমনকি কিছু জিনিস রয়েছে যা ৯ হাজার বছর আগের।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা