• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

কেনার আগে দেখতে হবে ইনভয়েস, যেভাবে চিনবেন নকল ওষুধ

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১  

ওষুধ বিক্রির সময় প্রতিটি কোম্পানি ফার্মেসিকে একটি ইনভয়েস তালিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যদিয়ে কোম্পানিটি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের তালিকাভুক্ত কি না তা সহজে বুঝতে পারবেন একজন ক্রেতা। ফার্মেসি কর্তৃপক্ষ যদি ইনভয়েস দেখাতে না পারেন তাহলে বুঝতে হবে সেখানে ঝামেলা আছে। তাই ওষুধ কেনার আগে ফার্মেসি থেকে ইনভয়েস দেখে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি দক্ষিণ বিভাগ) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম।

সম্প্রতি একের পর এক নকল ওষুধের চালান ও সরবরাহকারীরা ডিবির হাতের ধরা পড়ছে। সর্বশেষে শনিবার ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) লালবাগের কোতোয়ালি জোনাল টিম রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার বাবুবাজার সুরেশ্বরী মেডিসিন প্লাজার নিচতলার মেডিসিন ওয়ার্ল্ড ও লোকনাথ ড্রাগ হাউস এবং পাশের হাজি রানি মেডিসিন মার্কেটের নিচতলার রাফসান ফার্মেসিতে অভিযান পরিচালনা করে প্রচুর পরিমাণে নকল ও অবৈধ ওষুধ জব্দ করে। এ সময় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

মানুষ কীভাবে ভেজাল ওষুধ চিনতে পারবে এ প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, রেজিস্ট্রারকৃত সকল ওষুধের লিস্ট আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে, সেখান থেকে জনগণ এ বিষয়ে জানতে পারে। আর জনগণকে অবশ্যই ইনভয়েস নম্বর দেখে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতে হবে। ইনভয়েস নম্বর হলো ওষুধের সার্টিফিকেট। যে কোম্পানি থেকে ওষুধ ক্রয় করা হয় সে কোম্পানির ইনভয়েস ওষুধ ফার্মেসিকে সংরক্ষণ করতে হয়। তাহলে ফার্মেসিগুলো চাপের মুখে থাকবে। এতে নকল ওষুধের চাহিদা তারা দেবে না।

ভেজাল ওষুধের ক্ষতি সম্পর্কে তিনি বলেন, নকল ওষুধ সেবন করলে মূল সমস্যা হয় লিভার এবং কিডনিতে। সে কারণে বাংলাদেশে লিভার ও কিডনিজনিত রোগী বাড়ছে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি এ ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণ করতে। শনিবার অভিযানে তিন সরবরাহকারীসহ প্রচুর পরিমাণে নকল ওষুধ জব্দ করা হয়। অভিযানে আই-পিল, নেপ্রোক্সি প্লাস ৫০০+২০০ এম.জি, বেটনোভেট-সি, প্রোটভিট ২০সহ বিভিন্ন রোগের নকল ওষুধ জব্দ করা হয়।

এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, সব থেকে বড় কথা হচ্ছে জনগণ যে এসব ভুয়া ওষুধ খেয়ে প্রতারিত হচ্ছে, সেখানে জনগণেরও একটি সচেতনতার দায়বদ্ধতা আছে। যেসব দোকানে ওষুধ বিক্রি হয় সেসব দোকানে ওষুধের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বৈধ ওষুধের তালিকা ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে দেওয়া থাকে। ওষুধ কিনতে যাওয়ার সময় এসব তালিকা দেখার অধিকার সাধারণ ক্রেতাদের আছে। এছাড়া কোম্পানি ইনভয়েস প্রতিটি ফার্মেসিতে থাকে। ওষুধ বিক্রির সময় কোম্পানিগুলো এই ইনভয়েস ফার্মেসিগুলোকে দেয়। নকল ও ভুয়া ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে ফার্মেসিতে গিয়ে ক্রেতাদের অবশ্যই তালিকাগুলো দেখা উচিত। ইনভয়েস না দেখে ওষুধ কেনা উচিত নয়।

ভেজাল ওষুধ তৈরি বন্ধ কেন করা যাচ্ছে না জানতে চাইলে ডিবির এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, বন্ধ হচ্ছে না বিষয়টি এমন নয়। এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। আমাদের পাশাপাশি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। ভেজাল ওষুধ উৎপাদন থেকে শুরু করে সরবরাহ পর্যন্ত সাইকেলটা কীভাবে কাজ করে জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ভেজাল ওষুধ বাজারজাতকরণে এ সাইকেলটাই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উৎপাদনকারী কোনো না কোনো ধরনের চাহিদা বাজার থেকে পেয়ে থাকেন। তাদের নিশ্চয়ই বলা হয় এই ওষুধ তৈরি করে দেন আমারা বাজারে চালিয়ে দেবো। তবে সাইকেলের আসল কেন্দ্র হচ্ছে মিটফোর্ড। মিটফোর্ড থেকেই নকল ওষুধ দেশের সকল ফার্মেসিতে যাচ্ছে।

দেশে কয়টি প্রতিষ্ঠান ইউনানি লাইসেন্স নিয়ে নকল ও অবৈধ ওষুধ তৈরি করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের তালিকা অনুযায়ী প্রায় ৫০টির মতো রয়েছে। এগুলো অনেক সময় দেখা যায় বন্ধ থাকে। কিন্তু রাতের আঁধারে কারখানা খুলে তারা কার্যক্রম চালায়। পরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এ ওষুধ তারা সারাদেশে পাঠিয়ে দেয়।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা