• বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

  • || ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

গ্রামীণফোনের দেনা মীমাংসা বাইরে নয় : আপিল বিভাগ

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৯  

গ্রামীণফোনের কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবি করা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বিষয়ে আদালতের বাইরে কোনো মীমাংসা করা যাবে না বলে আদেশ দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর) এই আদেশ দেন। চলমান বিবাদ নিরসনে আদালতের বাইরে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে করতে বিটিআরসিকে টেলিনর এশিয়ার পক্ষে প্রস্তাব দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। পরে এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য আগামী রবিবার (২৫ নভেম্বর) পরবর্তী  তারিখ নির্ধারণ করেন।

আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও শেখ ফজলে নূর তাপস। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মেহেদী হাসান চৌধুরী, শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, মুরাদ রেজা ও খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

খন্দকার রেজা-ই-রাকিব সাংবাদিকদের বলেন, 'যেহেতু (বিটিআরসি) পাওনা নিয়ে নিষ্পত্তির বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পেন্ডিং আছে সেহেতু এটি অন্য কোনো মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে নিষেধ করেছেন আপিল বিভাগ। আদালতের বাইরে অন্য কোনও মধ্যস্ততায় সালিশ (আরবিট্টেশন) করা যাবে না বলেছেন।' 

এর আগে গত ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবি করা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার মধ্যে ২০০ কোটি টাকা দিতে চায় গ্রামীণফোন। তবে অর্থমন্ত্রী ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে গত ৩ অক্টোবর গ্রামীণফোনের সমঝোতা বৈঠকের প্রস্তাবনার শর্ত পূরণ হলেই কেবল এই টাকা দিতে রাজি গ্রামীণফোন। কিন্তু বিটিআরসি এই প্রস্তাবে রাজি নয়। রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠান হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়েছে। আপিল বিভাগ ১৮ নভেম্বর আদেশের দিন ধার্য করেন।

হাইকোর্ট গত ১৭ অক্টোবর গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা দাবি করে বিটিআরসির দেওয়া চিঠির কার্যকারিতার ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগে আবেদন করে। এই আবেদনের ওপর শুনানিকালে গ্রামীণফোন আপাতত কত টাকা দিতে পারবে তা প্রথমে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এবং পরবর্তীতে ১৪ নভেম্বরের মধ্যে আদালতকে জানানোর নির্দেশ ছিল। গতকাল নির্ধারিত দিনে গ্রামীণফোন ২০০ কোটি টাকা দিতে পারবে বলে জানায়, কিন্তু বিটিআরসি তাতে রাজি না হওয়ায় আদালত আগামী ১৮ নভেম্বর আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

শুনানিকালে গ্রামীণফোনের পক্ষে গত ৩ অক্টোবর অর্থমন্ত্রী ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে গ্রামীণফোনের সমঝোতা বৈঠকে পাঁচটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবগুলো হলো : ১. লাইসেন্স বাতিলের কারণ দর্শানোর নোটিশ ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে বিটিআরসি। অন্যদিকে অপারেটররা মামলা প্রত্যাহারে পদক্ষেপ নেবে। ২. দুই পক্ষ একটি কমিটি গঠন করে পাওনা পরীক্ষা অথবা পরীক্ষার পদ্ধতি বের করবে। ৩. কমিটি গঠন ও কমিটির কাজ শুরুর আগে সাত দিনের মধ্যে গ্রামীণফোন বিটিআরসিকে ১০০ কোটি টাকা এবং পরের এক মাসের মধ্যে আরো ১০০ কোটি টাকা দেবে। রবি দুই দফায় দেবে ৫০ কোটি টাকা। ৪. এসব প্রস্তাব দুই অপারেটর তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যালোচনা ও অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করবে। ৫. অর্থমন্ত্রী, টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, এনবিআর ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান কমিটির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রাখবেন। সুতরাং আমরা এই শর্ত মানলে টাকা দিতে রাজি।

এর বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, 'তাঁরা নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (স্বত্ব মামলা) করলেন। এই মামলায় হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। আমরা নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চাই।' 

একইদিন বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দেয় গ্রামীণফোন। এতে বলা হয়,  'আপিল বিভাগ ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছে। এর ফলে বিটিআরসির ওপর মহামান্য হাইকোর্টের দেওয়া নিষেধজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। আমরা আশা করছি আদালতের ওপর আস্থা রেখে বিটিআরসি হাইকোর্টের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা মেনে চলবে।' 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'বিটিআরসির অডিট সঠিক নয়, আর তাই এই অডিটের ভিত্তিতে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা বন্ধ করা উচিত। আমরা আশা করছি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং গ্রাহকদের সেবা প্রদানে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি আমদানিতে খুব শিগগির বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করবে।'

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা