• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

আজান শ্রবণকারীর ক্ষেত্রে যা মুস্তাহাব

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২৩  

ইসলামে প্রতি ওয়াক্তের এবং জুমার নামাজে যোগ দেওয়ার জন্য মুসল্লিদের নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আহ্বান জানানো হয়; যাকে আজান বলা হয়। আজান হলো নামাজ পড়ার আহ্বান।

কোরআনের সূরা আল মায়িদার ৫৮ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর তোমরা যখন নামাজের জন্য ডাকো, তখন তারা তাকে হাসি-তামাশা ও খেলার জিনিস বলে নেয়’। প্রার্থনার জন্য আহ্বান করতে খ্রিষ্টানরা ঘণ্টা বা কাঠের বাজনা ব্যবহার করত। ইহুদিরা শিঙা ফুঁকত। হজরত মোহাম্মাদ (সা.) মদিনায় আজানের প্রবর্তন করেন। ইসলামে প্রথম মুয়াজ্জিন ছিলেন বিলাল ইবনে রাবাহ। ইসলাম ধর্মে প্রতিদিন পাঁচবার নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়।

আাজনের আওয়াজ যাদের কাছে পৌঁছবে তাদের প্রত্যেকেই কেয়ামতের ময়দানে মুয়াজ্জিনের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মুয়াজ্জিনের আওয়াজ যার কাছেই পৌঁছবে, হোক সে মানুষ, জিন অথবা অন্যকোনো জিনিস, সে কেয়ামতের ময়দানে মুয়াজ্জিনের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে’। (বুখারি)

মানুষ যদি জানত আজানের মধ্যে কী ফজিলত রয়েছে, তবে তারা অবশ্যই এর জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হত। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মানুষ যদি জানত আজান ও প্রথম কাতারের মধ্যে কি ফজিলত রয়েছে আর তারা লটারির আশ্রয় নেয়া ছাড়া তা পেত না, তবে তারা এর জন্য অবশ্যই লটারির আশ্রয় নিত’। (বুখারি)

আজান

الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن محمداً رسول الله، أشهد أن محمداً رسول الله، حَيَّ على الصلاة، حَيَّ على الصلاة، حَيَّ على الفلاح، حَيَّ على الفلاح، الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله

আজান শ্রবণকারীর ক্ষেত্রে যা মুস্তাহাব

(১) মুয়াজ্জিন যা বলে তা বলা, তবে হাইয়া আলাস্সালাহ এবং হাইয়া আলাল ফালাহ বলার সময় لا حَوْل ولا قُوَّة إِلا بالله বলা। (বুখারি)

(২) আজানের পর বলা

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إلا الله وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا، وَبِمُحَمَّد صلى الله عليه وسلمٍ رَسُولًا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا.

‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। তার কোনো শরিক নেই। আর মুহাম্মাদ তার বান্দা ও রাসূল। রব হিসেবে আল্লাহর প্রতি, রাসূল হিসেবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি এবং দীন হিসেবে ইসলামের প্রতি আমি সন্তুষ্টচিত্ত’। (মুসলিম)

(৩) আজানের পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়া। এরপর বলা-

اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ

‘হে আল্লাহ, যিনি এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং কায়েমতব্য নামাজের রব! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ওয়াসিলা তথা জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান ও মর্যাদা দান করুন এবং আপনি তাকে প্রেরণ করুন প্রশংসিত স্থানে যার ওয়াদা আপনি তাকে দিয়েছেন’। (আবু দাউদ)

(৪) আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে নিজের জন্য দোয়া করা; কেননা এসময় দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না’। (আহমদ)

উল্লেখ্য, মুস্তাহাব অর্থ কি এর সবচেয়ে যে সঠিক উত্তর বা বেশি ব্যবহৃত উত্তর সেটি হচ্ছে পছন্দনীয়। আর ইসলামে এটিকে পছন্দনীয় ইবাদতের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা প্রিয় নবী (সা.) পছন্দ করেছেন। মুস্তাহাব অর্থ হলো পছন্দনীয়, উত্তম, মঙ্গলকর এবং ভালো ইত্যাদি। ইসলামে শরিয়তের পরিভাষায় মুস্তাহাব শব্দের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অর্থ হলো পছন্দনীয়।

অর্থাৎ আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এর নিকট যেসব ইবাদত বা আমল পছন্দনীয় ছিল সেগুলোকে মুস্তাহাব বলা হয়। এমন কিছু কিছু আমল রয়েছে যেগুলো আমাদের প্রিয় নবী (সা.) অনেক বেশি পছন্দ করতেন ফরজ না হওয়া সত্বেও এবং এই সব ইবাদতগুলোই হচ্ছে মুস্তাহাব।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা