• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

ভোমরা স্থলবন্দর এখন অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দরে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে তেঁতুলের একটি ট্রাক আটক করা হয়েছে । ভারত থেকে আসা একটি তেতুলের ট্রাক প্রবেশ করলেও স্কেলে দায়িত্বরত কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তারা তার কোন ওজন করেনি এবং ওজন স্লিপও প্রদান করেনি। বন্দরটিতে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ, এর নেপথ্যে রয়েছে দায়িত্বরত কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তারা। কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় না হওয়ায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে।ভোমরা স্থলবন্দর এখন অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য।

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ ৩টায়  সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা স্থলবন্দরে শুল্ক ফাঁকি দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মেসার্স মা ট্রেডার্স নামক সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানের একটি তেঁতুলের ট্রাক (ট্রাক নং- WB-41-F- 2268) আটক করা হয়। ট্রাকটি বন্দরের ৩নং স্কেল দিয়ে দিয়ে ইয়ার্ডের মধ্যে প্রবেশ করলেও স্কেলে দায়িত্বরত কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তারা তার কোন ওজন করেনি এবং ওজন স্লিপও প্রদান করেনি। পরবর্তীতে গাড়িটি আটক করলে সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান মেসার্স মা ট্রেডার্স এর কর্মচারীর নিকট হতে ইনভয়েস সংগ্রহ করা হয়। ইনভয়েসটিতে ট্রাকটিতে পণ্য আনার কথা ছিল ২৭.৩০০ মেট্রিক টন। তবে, প্রকৃতপক্ষে ট্রাকটিতে পণ্য ছিল ৩০.৬৩০ মেট্রিক টন। সিএন্ডএফ ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ৩.৩৩০ মেট্রিক টন পণ্যের শুল্ক ফাঁকি দেয়ার পায়তারা করছিল, যার রাজস্বের পরিমাণ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ট্রাকটি আটক করে অতিরিক্ত পণ্যের রাজস্ব আদায় করা হয়।

উল্লেখ্য, দুটি স্কেলে কাস্টমসের দায়িত্বে ছিলেন ইন্সপেক্টর মোঃ রাকিব হাসান ও নাঈমুল বাশার এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে দায়িত্বে ছিলেন টিআই তন্ময় হোসেন ও মোঃ সালাউদ্দিন হোসেন। পরীক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন রাজস্ব কর্মকর্তা শেখ নাজমুল হুদা ও ইন্সপেক্টর মোঃ ইকবাল হোসেন। অপরদিকে, ব্যাগেজ সেকশনে দায়িত্বরত রয়েছেন রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ বাবলুর রহমান, ইন্সপেক্টর সুমন কর্মকার ও সিপাহী সুমন হোসেন। উপকর কমিশনার এনামুল হক বর্তমানে ছুটিতে ঢাকায় থাকলেও এই ধরনের অনিয়ম তার নির্দেশনা মতেই হয়ে থাকে।

উল্লেখ্য তিন-চার বছর আগেও কর্মচাঞ্চল্যে মুখর থাকত সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর। এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করত। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বদলেছে বন্দরের সেই চিত্র। নানা কারণে ব্যবসায়ীরা এই বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এতে আমদানি-রপ্তানি কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কমে অর্ধেকে নেমেছে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, আগে যেখানে প্রতিদিন চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক এই বন্দরে মালামাল নিয়ে আসত, বর্তমানে এই সংখ্যা ২-এর নিচে নেমেছে। গত ২২ জানুয়ারি বন্দরটি দিয়ে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকেছে মাত্র ১০৯টি।

২০০৪-০৫ অর্থবছরে এই বন্দর থেকে রাজস্ব আদায় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। ভোমরা শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে আদায় হয়েছে মাত্র ৬৩১ কোটি। কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় না হওয়ায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৮৫৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা