• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা-৪: লড়াই হবে নৌকা-কুলা-ধানের শীষে

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮  

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ (আংশিক) উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৪ আসনে নৌকা, ধানের শীষ ও কুলা প্রতীকের প্রার্থীদের মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। 

এ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য স ম জগলুল হায়দার, ধানের শীষ নিয়ে সাবেক এমপি জামায়াত নেতা গাজী নজরুল ইসলাম, বিকল্পধারার কুলা প্রতীক নিয়ে সাবেক এমপি এইচএম গোলাম রেজা, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীক নিয়ে আব্দুস সাত্তার মোড়ল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাত পাখা প্রতীক নিয়ে আব্দুল করিম ও বাঘ প্রতীক নিয়ে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের রবিউল ইসলাম জোয়ারদার ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। 

মহাজোট একক প্রার্থী নির্ধারণে ব্যর্থ হওয়ায় সাতক্ষীরা-৪ আসনে ভোটের জটিল সমীকরণ তৈরি হলেও প্রচারণায় এগিয়ে আছেন নৌকার স ম জগলুল হায়দার। তবে, পিছিয়ে নেই বিকল্পধারার কুলা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি গোলাম রেজাও। আর ধানের শীষের প্রার্থী গাজী নজরুল রয়েছেন কারাগারে। 

স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী স ম জগলুল হায়দার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকার সর্বত্র দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। ব্যানার, পোস্টার, মাইকিং, পথসভায় তুলে ধরছেন সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম। তার জয় নিশ্চিতে বিভেদ ভুলে এক মঞ্চে উঠছেন শ্যামনগর-কালিগঞ্জের আওয়ামী লীগের নেতারা। 

অপরদিকে, কুলা প্রতীকের প্রার্থী বিকল্পধারার এইচএম গোলাম রেজাও পিছিয়ে নেই গণসংযোগে। হামলা-মামলার শিকার হলেও নিজ নিজ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন গণসংযোগ। নবম জাতীয় সংসদের এমপি থাকায় এলাকায় তার পূর্ব পরিচিতি রয়েছে। সেসময় করা উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি ভোট প্রার্থনা করছেন। 

এদিকে, ২০ দলীয় জোটের ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক এমপি জামায়াত নেতা গাজী নজরুল ইসলাম রয়েছেন কারাগারে। তার কর্মী-সমর্থকদের মাঠে নামতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। 
 
প্রথমে কিছু পোস্টার ফেস্টুন টানানো হলেও বেশ কিছুদিন মাঠে দেখা যাচ্ছে না জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুস সাত্তার মোড়লকে। 

অন্যদিকে, পোস্টারিং, মাইকিং, পথসভার মধ্য দিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আব্দুল করিম নির্বাচনের মাঠে থাকলেও মাঠে নেই বাঘ প্রতীকের রবিউল ইসলাম জোয়ারদার। 

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাতক্ষীরা-৪ আসনে কুলা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি এইচএম গোলাম রেজা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী স ম জগলুল হায়দারের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এলাকায় ধানের শীষের প্রচারে ব্যর্থ হওয়া মানুষ এখন কুলা প্রতীকের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে এবং শেষ পর্যন্ত কুলায় আস্থা রাখলে স ম জগলুলের পরাজয় নিশ্চিত। 

আবার স্থানীয়দের ধারণা, কুলা প্রতীকের পক্ষ নিয়ে ভোটকেন্দ্র পর্যন্ত যেতে পারলে জামায়াত-বিএনপির সমর্থকদের একচেটিয়া ভোটে লড়াইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেন কারাগারে থাকা গাজী নজরুল ইসলাম। 

যদিও অনেকেই মনে করেন, আগামীতেও আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে। তাই ধানের শীষে ভোট না দিয়ে জগলুল হায়দারের পরিবর্তে সর্বশেষ কুলা প্রতীকে আস্থা রাখলে মহাজোটের শরীক বিকল্পধারার এইচএম গোলাম রেজার জয়ও ঠেকাতে পারবে না কেউ। 

আর জাতীয় পার্টির আব্দুস সাত্তার মোড়লের নেতিবাচক ইমেজ এবং হাতপাখা ও বাঘ মার্কার প্রার্থীদের দলীয় ভোট না থাকায় তারা ভোটের লড়াইয়ে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারবেন না বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা। 

সবমিলিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসনে স ম জগলুল হায়দার, এইচএম গোলাম রেজা ও গাজী নজরুলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখছেন সবাই। 

এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী স ম জগলুল হায়দার বাংলানিউজকে বলেন, এলাকার সর্বত্র নৌকার জোয়ার বইছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। নৌকার জয় সুনিশ্চিত। 

কুলা প্রতীকের প্রার্থী এইচএম গোলাম রেজা বলেন, আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রচার মাইক ভেঙে দেয়া হচ্ছে। মামলা দিতে মিথ্যা নাটক সাজানো হচ্ছে। তারপরও সর্বত্র কুলার জোয়ার। আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। 

জাতীয় পার্টির আব্দুস সাত্তার মোড়ল  বলেন, তার সমস্ত পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। তাকে নির্বিঘ্নে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। 

প্রসঙ্গত, জেলার শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৪ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৯৩ হাজার ৪৭৯ জন। 

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা