• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

শ্যামনগরে দখলে পানি সরবারাহের খাল: তলিয়ে গেছে একাধিক গ্রাম

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২১  

প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিমজ্জিত সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পানি সরবরাহের একাধিক খাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ডুবে গেছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামগুলো। তলিয়ে গেছে মৎস্য ঘের, মিষ্টি পানির পুকুর,বসতভিটা ও রাস্তাঘাট। গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পানি সরবরাহ না হতে পেরে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। আটুলিয়া,কৈখালী,বুড়িগোয়ালীনি সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে দেখা যায় গেল ২দিনের বর্ষার পানিতে বিল,পুকুর এবং বসতভিটা এক হয়েছে।

পানি সরবরাহের পথ না থাকায় অতিরিক্ত জলাবদ্ধতার কারণে নতুন দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। আটুলিয়া ইউনিয়নের কাটাখাল নামক স্থানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাটা খালের মধ্যে একাধিক নেট পাটা ও বেড়িবাঁধ দেওয়ার কারণে পুরো এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

বিগত দিনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে খালের নেট পাটা ও বেড়ি বাঁধ অপসারণ করলেও তা আবারো অবৈধ দখলদারিত্বের রাজত্ব কায়েম করেছে ভূমিদস্যুরা।যার ফলে এলাকার মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে।নেট পাটার কারণে পানি সরবরাহ না হতে পেরে একজন দখলদারের কারণে এলাকার হাজারো মানুষ বিপদের সম্মুখীন হয়েছে।এলাকার মানুষ ইউনিয়নের সকল খাল উন্মুক্তের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন। উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের খোসালখালী গ্রামের চিত্র দেখলে যেন বোঝার উপায় নেই কোনটা ভিটা, কোনটা মাছের ঘের আর কোনটা চলাচলের রাস্তা।ভারী বর্ষার কারণে সব একাকার হয়েছে।এলাকার মানুষ রয়েছে চরম দুর্ভোগে।বছরের বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিমজ্জিত এই এলাকার মানুষের যেন দুঃখ দুর্দশার একেবারেই শেষ নেই।

এলাকার পানি সরবরাহের স্থানগুলো রয়েছে দখলবাজদের দখলে।এছাড়া নদীতে পানি সরবরাহের জন্য তৈরিকৃত ¯øুইচ গেটটির বেহালদশা থাকায় আরো বিপাকে পড়েছে এলাকার মানুষেরা। ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের কয়ালপাড়া নামক স্থানে দেখাযায় জলাবদ্ধতার কারণে তলিয়ে গেছে আউশ ধানের ক্ষেত।এলাকার মানুষের ভাষ্যমতে এই এলাকায় একাধিক পানি সরবরাহের জন্য খাল থাকলেও তা দখল করে ভিটায় পরিণত করেছে ভূমি দস্যুরা।যার ফলে প্রতি বছর আউশ এবং আমনের সময়ে ব্যাপকভাবে লস গুনতে হয় চাষিদের। কৈখালী ইউনিয়নের সাহেবখালী-বৈশখালী সহ একাধিক খাল অবৈধ দখলে থাকায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি উঠেছে রাস্তা ও বসতভিটায়।কিছুদিন পূর্বে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকার মানুষ।এরপর আবার টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে আবারো ক্ষতিতে পড়েছে এলাকার অধিকাংশ নিম্ন শ্রেণির মানুষেরা।

কৈখালী ইউনিয়নের বড় মৌ কাটলার খালটি স্থানীয় ভাবে একাধিক ব্যক্তির অবৈধ দখলে থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকার মানুষ।এলাকার শত শত বিঘা ধানের ক্ষেত, পানির পুকুর, বসতভিটা হয়েছে একাকার। স্থানীয় জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন এই সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করলেও তা সমাধান না হওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে তাদের। জলাবদ্ধতার অভিশাপে নিমজ্জিত হয়েছে উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম।এরমধ্যে ভেটখালি দক্ষিনপাড়া গ্রামটি রয়েছে চরম দুর্ভোগের মধ্যে।এলাকায় পানি নিষ্কাশনের কুড়ার খাল নামক একটি খাল থাকলেও তা এখন রয়েছে অন্যদের দখলে।শুকনা মৌসুমে যেমন পানি চাইলে গুনতে হয় টাকা আবার বর্ষা মৌসুমে এসে ভুগতে হয় জলাবদ্ধতায়।

স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় খালটি এলাকার একাধিক ব্যক্তি তাদের দখলে রাখায় তারা শুকনো এবং বর্ষা উভয় মৌসুমে বিপদে পড়েন।উপজেলার বিভিন্ন দখলকৃত খাল এবং জলাবদ্ধতা নিয়ে শ্যামনগর সহকারী কমিশনার ভূমি মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন,আমরা উপজেলার সকল অবৈধ খাল দখলদারিত্ব মুক্ত করব, ইতিমধ্যে কয়েকটি খাল দখল মুক্ত হয়েছে। আমাদের এই অভিযান চলমান থাকবে।শ্যামনগর হবে জলাবদ্ধতা মুক্ত উপজেলা।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা