• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

মেনে চলুন সামাজিক দূরত্ব

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৫ এপ্রিল ২০২০  

১. ভয়াবহ মরণ ব্যাধি করোনা। মহামারীরূপে ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। পৃথিবীর তাবৎ শক্তিশালী, উন্নত, অভিজাত, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ দেশগুলো পর্যুদস্ত হয়েছে করোনার কাছে। চীন, ইতালি, স্পেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইরানসহ প্রায় দুইশত দেশ প্রাণঘাতী করোনার মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে।

২. করোনা প্রতিরোধে কারও একার পক্ষে সম্ভব নয়। সম্ভব নয় শুধু সরকারের পক্ষেও। রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে শুরু করে প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি ঘরে করোনা প্রতিরোধে সচেতন হতে হবে। প্রতিটি ব্যক্তি নিজ নিজ অবস্থান থেকে করোনা প্রতিরোধে বিশাল এবং প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে পারেন। করোনা প্রতিরোধে একটি চমৎকার এবং সবার জন্য অবশ্য করণীয় পদ্ধতির নাম সামাজিক দূরত্ব (Social Distancing)। 

সামাজিক দূরত্বকে শারীরিক দূরত্ব ও বলা হয়ে থাকে। সামাজিক দূরত্ব হলো সংক্রমণ প্রতিরোধের একটি কার্যকর পদ্ধতি যার মূল উদ্দেশ্য হলো সংক্রমণ ছড়ানোকে থামানো কিংবা কমানো। সামাজিক দূরত্ব তৈরির মাধ্যমে সংক্রমিত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্যের কাছে রোগ সংক্রমণ হবে না এবং অসংক্রমিত ব্যক্তি সংক্রমিত হবে না। যেসব রোগব্যাধি হাঁচি/কাশি (ড্রপলেট) সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ, পরোক্ষ সংস্পর্শ (সংক্রমিত বস্তুর স্পর্শ) বা বাতাসে ছড়ায় সেসব রোগ সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। 

 

৩. সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের বিষয়টি নতুন কিছু নয়। ১৯১৬ সালে নিউইয়র্ক সিটি পোলিও এপিডেমিক থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধির এপিডেমিক এবং পেনডেমিক সংক্রমণ (সার্স, ইবোলা) রোধে এ পদ্ধতি কার্যকর বলে প্রমাণিত।  

৪. সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টিতে যা করা উচিত তা আমরা সবাই ইতিমধ্যে জেনে গেছি। সরকারি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা তার কতটুকু মেনে চলছি তাই মহামূল্যবান প্রশ্ন। 

সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টিতে আমাদের অবশ্যই যেসব বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো-

 * সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা (কোচিং, প্রাইভেটসহ) * কর্মক্ষেত্র বন্ধ রাখা * অপরিহার্য নয় এমন সব ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস আদালত বন্ধ রাখা * প্রয়োজনীয় কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন নিশ্চিত করা * সবার ব্যক্তিগত প্রতিরোধমূলক/নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা * সাবান পানি/সেনিটাইজার দিয়ে কমপক্ষে ২০-৩০ সেকেন্ড প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর হাত ধোয়া * মাস্ক ব্যবহার করা * গ্লাভস ব্যবহার করা * চিকিৎসকদের পিপিই (পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) অবশ্যই ব্যবহার করা * হ্যান্ড সেক্না করা (সংক্রমণ ছড়ানো প্রতিরোধে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ) * বুকে না জড়ানো, আলিঙ্গন না করা ইত্যাদি * জনসমাবেশ/ জনসমাগম বন্ধ করা (মিছিল, মিটিং, সভা-সমাবেশ, জমায়েত, খেলাধুলা, ক্লাব, মিউজিক) * চিত্তবিনোদন বন্ধ করা (বার, জিমনেশিয়াম, সুইমিং, মিউজিক ক্লাব) * গণপরিবহন বন্ধ করা (সংক্রমণ বিস্তারে এটা মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে) * নিজের ‘সুরক্ষা কবচ’ হিসেবে নিজেকে অন্যের কাছ থেকে দূরে রাখা, * জনসমাগম এড়িয়ে চলা, * ভ্রমণ, * গণপরিবহন ব্যবহার বন্ধ করা ইত্যাদি। 

৫. উপরের সব বিষয় আমরা সবাই কম-বেশি জানি। মূল কাজটি হলো তা অনুসরণ করা ও মেনে চলা। সবার সম্মিলিত সচেতনতা, তার প্রয়োগ এবং অনুসরণ আমাদের ভয়াবহ এই করোনা প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। 

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা