• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

মুক্তবাণিজ্য চুক্তি অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ১১ দেশের সঙ্গে

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২০  

করোনা সঙ্কটের কারণে ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বিশ্বের এগারটি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটানের সঙ্গে প্রথম এ ধরনের একটি চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

গত বিশ বছর ধরে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা ও একাধিক বৈঠকের পর এ ধরনের একটি চুক্তির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি- এফটিএ এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি-পিটিএ অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে যাচ্ছে। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার বড় সুবিধা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য রফতানির সুযোগ পাওয়া। এর পাশাপাশি এ ধরনের চুক্তির ফলে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ে ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়। সাপটা ও আপটা চুক্তির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এফটিএ ও পিটিএ থেকে বেশি সুবিধা আদায় করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসায় ২০২৪ সালের পর এ ধরনের চুক্তির বাইরে বাজার সুবিধা নেয়ার সুযোগ আর থাকছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।

এদিকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ১১টি দেশের সঙ্গে এফটিএ সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে সরকার। সবগুলো দেশের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। এ ধরনের চুক্তির ফলে বাংলাদেশ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে নজর রাখার কথা জানানো হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে ভুটানের সঙ্গে প্রথম অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে দু’দেশের মন্ত্রী পর্যায়ে চুক্তিটি করা হতে পারে। এরপরই বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে এফটিএ চুক্তি করার উদ্যোগ রয়েছে। করোনার কারণে চাপে রয়েছে সামষ্টিক অর্থনীতি। এই চাপ সামাল দিতে দ্রুত ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকা- সম্প্রসারণ হওয়া উচিত বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

জানা গেছে, গত ২০ বছর আগে দেশে প্রথম মুক্ত বাণিজ্য-এফটিএ ও অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি-পিটিএ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু দীর্ঘ এই সময়ে নানা জটিলতার কারণে একটি দেশের সঙ্গেও এ সংক্রান্ত চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ ধরনের চুক্তিতে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু করোনা সঙ্কট উত্তরণ ও স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসার মতো বড় বিষয় এখন অর্থনীতির সামনে যুক্ত হয়েছে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ এখন রক্ষণশীলতার নীতি থেকে বেরিয়ে এসে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট-এফটিএ এবং প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট-পিটিএ চুক্তি করার বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, করোনা সঙ্কট ও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের মতো কঠিন চ্যালেঞ্জ এখন অর্থনীতির সামনে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ও অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি একটি বড় বিষয়। আর এ কারণে বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি করা হবে। এ পর্যন্ত ১১টি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। শীঘ্রই এসব দেশের সঙ্গে চুক্তি করা হবে। এর বাইরে নেপাল, ইন্দোনেশিয়া ও ভুটানের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষরের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। শীঘ্রই এ ধরনের বেশকিছু চুক্তি স্বাক্ষর করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

এদিকে করোনা সঙ্কটে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার কারণে চলতি বছর বিশ্ব বাণিজ্য হ্রাসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশেও তৈরি পোশাকসহ সার্বিক রফতানি ক্রমাগত হারে হ্রাস পাচ্ছে। উন্নতবিশ্বে চাহিদা হ্রাসের কারণে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে তৈরি পোশাক রফতানিতে ঋণাত্মক ধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্বব্যাপী লকডাউনের কারণে সামনের দিনগুলোতে রফতানি আরও কমার আশঙ্কা করা হয়েছে। এ অবস্থায় নতুন নতুন বাজার সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) চলমান বিভিন্ন আলোচনায় স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরও স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রযোজ্য সুবিধাসমূহ একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অব্যাহত রাখার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকা- বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে অনেক দেশের সঙ্গে এফটিএ ও পিটিএ চুক্তি করার বিষয়ে সরকার আগ্রহী। তবে চুক্তির আগে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাইসহ অনেক বিষয় রয়েছে। তিনি বলেন, ভুটান, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দ্রুত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করা হবে। তিনি বলেন, দেশের রফতানি সম্প্রসারণে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। সেটি অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) কিংবা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) যাই হোক না কেন, অদূর ভবিষ্যতে বাজার সম্প্রসারণে সেদিকেই হাঁটতে হবে। এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে যেসব দেশে আমরা শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা পাই সেগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাবে। এ কারণে সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার উদ্যোগ রয়েছে।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, বিশ্বের ১৯৮টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য রয়েছে। এর মধ্যে ৭১টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। বিশাল এ ঘাটতি কমাতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ এবং পিটিএ স্বাক্ষরের উদ্যোগ রয়েছে। বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে থাইল্যান্ড-ভুটান বৃহৎ অংশীদার না হলেও নতুন বাজার সৃষ্টি এবং ভারত, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোর কাছে উপস্থাপনের জন্য এ চুক্তিটি কাজে দেবে। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য হয় চীনের সঙ্গে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চীন থেকে আমদানি হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকার পণ্য। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য হয় ভারতের সঙ্গে। গত বছর দেশটির সঙ্গে মোট দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য হয় ৭২ হাজার ৭৮ কোটি টাকার। এর মধ্যে আমদানি ৬৪ হাজার ২৫৩ কোটি টাকার ও রফতানি ৫ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার। এফটিএ চুক্তির জন্য এগিয়ে থাকা দুটি দেশের কোন একটিও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের শীর্ষ দশে নেই।

এদিকে বাংলাদেশী পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ, রফতানি বৃদ্ধি এবং দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে চীন, ভারত, ও সৌদি আরবসহ অন্তত ১৫টি দেশের সঙ্গে এফটিএ করার বিষয়ে মতামত দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চাওয়া হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ মতামত জানিয়ে দিয়েছে। এতে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, আর্জেন্টিনা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় ও বহুজাতিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মতামতে জানানো হয়েছে।

এদিকে রফতানি খাত সম্প্রসারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় এ ধরনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির কাজটি করে থাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফরেন অফিস কনসালটেশন মিটিংয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আগ্রহ প্রকাশ করে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশী পণ্যে বাজার সম্প্রসারণে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ করার সম্ভাব্যতা যাচাই করে বাণিজ্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে বলা হয়। পাশাপাশি এ ধরনের চুক্তির বিষয়ে মতামত চেয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয় অর্থনীতিতে রফতানির গুরুত্ব ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের রফতানিতে নতুন নতুন পণ্য সংযোজনের পাশাপাশি বাজার সম্প্রসারণে প্রধান অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করে এর সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে ভুটানের সঙ্গে পিটিএ’র বিষয়টি অনেকটাই চূড়ান্ত। থাইল্যান্ডের সঙ্গে এফটিএ’র বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। আগামী মাসের মধ্যে ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি করা হতে পারে। মূলত এফটিএ বা পিটিএ হলো- দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত অর্থনৈতিক চুক্তি। এফটিএ হলে দুই দেশের মধ্যে সবধরনের পণ্য ও সেবা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা যাবে। মূলত নিজেদের রফতানি বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ চুক্তি করে দুটি দেশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ চুক্তি করে বাণিজ্যকভাবে লাভবান হয়েছে।

এদিকে ভুটানের সঙ্গে পিটিএ হলে বাংলাদেশ প্রায় ৩০টি তৈরি পোশাক শিল্প পণ্যের ওপর সুবিধা পাবে। বিশেষ করে পাট ও পাট জাতীয় পণ্য, চামড়া পণ্য ও জুতা, ফ্যান, ড্রাই সেল ব্যাটারি, ঘড়ি, আলু, কনডেন্সড মিল্ক, সিমেন্ট, টুথব্রাশসহ অন্যান্য পণ্য রফতানি বাড়বে। অন্যদিকে ভুটানের কমলা, আপেল, আদা, ফলের জুস, পাথর, কাঠ, চুনাপাথরসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি হবে বাংলাদেশে। ভুটানের পাথর বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, রফতানি সম্প্রসারণে এফটিএ ও পিটিএ চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। ফলে এখন এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশ যে শূন্য শুল্ক সুবিধা পায় বিভিন্ন দেশের কাছে সেই সুবিধা অব্যাহত রাখতে চাইলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। আর এ ধরনের চুক্তির জন্য এখনই প্রস্তুতি নেয়া উচিত। তিনি বলেন, কোন কোন দেশের সঙ্গে চুক্তি লাভজনক হবে সেই দেশগুলোকে আগে চিহ্নিত করতে হবে। এরপর যে দেশের সঙ্গে যে খাতে চুক্তি দরকার যেমন- কোন দেশের সঙ্গে পণ্য, কোন দেশের সঙ্গে পণ্য ও সেবা বাণিজ্য চুক্তি লাভজনক হবে সেটি পর্যালোচনা করে চুক্তি করতে হবে। ঢালাওভাবে এই চুক্তি করা যাবে না।

প্রসঙ্গত দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল (সাফটা) চুক্তি ও এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাণিজ্য চুক্তির (আপটা) মতো দুটি আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সমঝোতা সম্পন্ন করে তা বাস্তবায়ন শুরু করার অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের। এছাড়া বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল এ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিও প্রায় চূড়ান্ত হওয়ার পথে। তবে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ধারণা যত পরিবর্তিত ও বিস্তৃত হচ্ছে বদলে যাচ্ছে গতানুগতিক কাঠামোও। শুধু পণ্যভিত্তিক নয়, সেবাখাত সম্পৃক্ত করে বিএফটিএ এখন বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এর সঙ্গে আবার যুক্ত হচ্ছে বিনিয়োগের বিষয়টি। এ তিনটি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর আশায় গত বছর ভারতের সঙ্গে সর্বাত্মক অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক কো-অপারেশন এ্যাগ্রিমেন্ট বা সেপা) স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। আরও রয়েছে মেধাস্বত্ব ও প্রতিযোগিতার মতো সংবেদনশীল বিষয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় রাষ্ট্রের সঙ্গে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহায়তা চুক্তি টিকফা কার্যকর করা হয়েছে। দু’দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এসেছে টিকফায়।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা