• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

মাজেদকে জিজ্ঞাসাবাদে খুনিদের প্রশ্রয়দাতাদের খোঁজ চায় আ’লীগ

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০২০  

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য উদঘাটনের পাশাপাশি কারা আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা, তা খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদেরও দেশের মাটিতে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে দলটি।

মঙ্গলবার (০৭ এপ্রিল) আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে আবদুল মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এই দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রবীণ রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘করোনার মহাদুর্যোগের সময়ে এটি অত্যন্ত স্বস্তির খবর যে, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার জেলহত্যার সঙ্গে জড়িত আবদুল মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  তবে কীভাবে এতোদিন পাশ্ববর্তী দেশটিতে পলাতক ছিলেন সেটিই প্রশ্ন।  সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্যান্টনমেন্টে তাকে (আবদুল মাজেদ) বাড়ি দিয়েছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর একজন খুনিকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে বাড়ি দিয়ে রাখার মানে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশয় দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো জিয়াউর রহমান এই খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলো।’

আবদুল মাজেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য উদঘাটনের দাবি জানিয়ে নাসিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও চার জাতীয় নেতাকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলো এই মাজেদ। কার নির্দেশে সেদিন সে জেলে ঢুকেছিলো। কারা তাকে আশ্রয় দিয়েছিলো, এটা বের হওয়া দরকার। আমি দাবি জানাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই খুনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব তথ্য বের করবে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য বলেন, ‘জাতির দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আইনের হাতে আটক হবে, তাদের দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করে রায় কার্যকর করা হবে। এটি দেশের জনগণের জন্য আনন্দের খবর যে পলাতক ছয় জনের একজন ধরা পড়েছে। জাতি আশা করে, বাকি খুনিরাও দ্রুত ধরা পড়বে এবং তাদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া দেখবে। বঙ্গবন্ধুর এই খুনিদের ফাঁসিতে না ঝোলানো পর্যন্ত জাতির ঋণ শোধ হবে না।’

সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘জাতির স্থপতিকে খুনের সঙ্গে জড়িত কুখ্যাত সেই খুনি আবদুল মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়ার মাধ্যমে জাতি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। আমরা আশা করি, বাকি যেসব খুনি দেশের বাইরে পালিয়ে আছে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। সরকার সেই অনুযায়ী কাজও করছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত এসব খুনিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত জাতি হিসেবে আমাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না। একই সঙ্গে মাজেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এটাও জাতির কাছে পরিষ্কার করা দরকার, কীভাবে জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়ার প্রশ্রয় সে পেয়েছে।’

আবদুল মাজেদকে গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে মুজিববর্ষে সরকারের স্বস্তিদায়ক অর্জন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা আশা করি বাকি আসামিরাও এভাবে ধরা পড়বে। কারণ পাপ কখনো বাপকেও ছাড়ে না। সরকারকে ধন্যবাদ যে কুখ্যাত এই খুনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন দ্রুত তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া দেখতে জাতি অধীর অপেক্ষা করছে। একই সঙ্গে বাকি খুনিদের দ্রুত দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করি।’

আবদুল মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অনন্য নজির বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ হ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

তিনি বলেন, ‘এই জাতির প্রত্যাশা ছিলো কবে বঙ্গবন্ধুর সব খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে। সরকার চেষ্টা করছে সেসব খুনিদের দেশের এনে বিচারের মুখোমুখি করার। এরই মধ্যে ভালো একটি খবর যে, ছয়জনের একজন ধরা পড়েছে। আশা করছি বাকিরাও ধরা পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘এটা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য স্বস্তিদায়ক খবর। খুনিদের রেহাই নেই। আইনের হাত অনেক লম্বা।’

‘অথচ জাতির কি দুর্ভাগ্য, যারা বাংলাদেশের স্থপতিকে খুন করলো সেই খুনিদের চাকরি দিয়ে, বিদেশে দূতাবাসে নিয়োগ দিয়ে, রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছে।’

‘জিয়াউর রহমান এগুলো করে তাদের একপ্রকার পুরস্কৃত করেছে। এর কারণ একটাই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলো। আর খালেদা জিয়া তাদের রক্ষা করার জন্যতো রায়ের দিন হরতালই ডেকে দিলো। সুতরাং এসব করেও খুনিদের শেষ রক্ষা হয়নি, হবেও না। তাদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতেই হবে।’

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ছয় পলাতক আসামির একজন প্রেপ্তার হওয়ায় শুকরিয়া আদায় করে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘জাতির এই দুর্যোগের মধ্যে নিঃসন্দেহে এটা ভালো খবর। আশা করি দ্রুত রায় বাস্তবায়ন হবে।’

তিনি বলেন, ‘তৎকালীন জিয়াউর রহমান তার শাসনামলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করেছে। ইনডেমনিটি বিলের মাধ্যমে তাদের যাতে বিচার না হয় সেই ব্যবস্থাটি পাকাপোক্ত করেছে। জাতি হিসেবে এর চেয়ে লজ্জার আর কি থাকে। এখন এসব আত্মস্বীকৃত খুনিদের যত তাড়াতাড়ি ফাঁসিতে ঝোলানে যাবে ততদ্রুত জাতির কলঙ্কমোচন হবে।’

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা