• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

বেশি মাত্রায় মেলাটোনিন, আরো তিন ওষুধ করোনায় কার্যকর

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০২০  

করোনাভাইরাস স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের থেকে শুরু করে সারাবিশ্বের মানুষকে নতুন এক ধরনের শিক্ষা দিচ্ছে। তবে বিশেষ করে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা নতুন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। কেউই করোনাভাইরাসের যুতসই ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারেননি এবং এই রোগের চিকিৎসার কোনো স্বীকৃত ওষুধও নেই।

এজন্য সারাবিশ্বের বহু বিজ্ঞানি নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসার ওষুধ আবিষ্কারের ব্যাপারে। সে ক্ষেত্রে আগে থেকে উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন ও ওষুধ করোনায় কতটা কাজে দেয়, তা পরীক্ষা করে দেখছেন অনেকেই।

অথচ এরই মধ্যে সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে মোট ১৯ লাখ ২৪ হাজার ছয়শ ৭৯ জন এবং মারা গেছে এক লাখ ১৯ হাজার ছয়শ ৯২ জন।

কিন্তু প্রতি বছর সারাবিশ্বে বেশিরভাগ মানুষই ফ্লুতে আক্রান্ত হন। অনেকেরই সর্দি-কাশি হয়, আবার কারো গলাব্যথা থাকে। কিন্তু এ বছর সবকিছু আলাদা। সাধারণ ফ্লুর মতো লক্ষণ থাকলেও তাদের ১৫-২০ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের এক-তৃতীয়াংশের আবার নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হচ্ছে। অনেকেই শ্বাস টেনে নিতে পারছে না। তাদের অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। একপর্যায়ে লাইফ সাপোর্টে নিতে হচ্ছে বহু মানুষকে।

করোনা আক্রান্তদের জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, শরীরে ব্যথা, বমি কিংবা পাতলা পায়খানা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গন্ধ নেওয়ার অনুভূতি ও জিহ্বার স্বাদ হারিয়ে যাচ্ছে।

ফিলিপাইন ডেইলি ইনকুইরার এর প্রধান রাফায়েল ক্যাস্টিলো বলেন, শারীরিকভাবে অনেক সবল এবং কম বয়সীরাও আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। তবে যাদের অ্যাজমা, হার্টে সমস্যা, ফুসফুসে সমস্যা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে এবং ধূমপানে অভ্যস্থ; তাদের ঝুঁকি বেশি।

যারা ধূমপান করেন, এখনই সময় অভ্যাস ত্যাগ করার। ধূমপায়ীংরা দ্রুত সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। অতীতে ধূমপানের জন্য দুঃখ হওয়া উচিত এবং এজন্য ক্ষমা চাওয়া দরকার। করোনার কবল থেকে বাঁচলেও পরবর্তী সময়ে নিকোটিন স্পর্শ না করাই ভালো হবে।

ফিলিপাইনের বিশেষজ্ঞরা একটি পরীক্ষা করতে বলেছেন। তা হলো- শ্বাস টেনে নিয়ে চেপে রাখতে। যদি ৭০ বছরের বেশি বয়স্করা মাত্র ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখতে পারেন, তাহলে বিষয়টি ভাবা দরকার। পরে তাদের শ্বাস চেপে রাখার সময় আরো কমে গেলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। তবে আগে থেকেই যাদের ফুসফুসে সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়। যারা বেশি সময় ধরে শ্বাস ধরে রাখতে পারেন, তাদের সমস্যা নেই।

বর্তমানে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখে। ফিলিপাইনের সোসাইটি অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড অক্যুপেশনাল ট্যাক্সিকোলজির বিশেষজ্ঞরা কিছু ওষুধের ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষ করেছেন। মানুষের শরীরে এসব ওষুধের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে অন্যদের সতর্ক করেছেন তারা। তাদের অনুরোধ, যেসব ওষুধের ক্ষতিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই, সেসব আমলে নেওয়া দরকার।

ফিলিপাইনের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেকেই শিরায় ৩০ টি ইনজেকশন দেওয়ার কথা বলছেন। তবে ভিটামিন সি এত পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করার ফলে বিশেষ করে এ জাতীয় চারটি ইনজেকশন একদিনে কোনো রোগীর শরীরে প্রবেশের ফল কিছুটা খারাপ দেখা যাচ্ছে।

করোনা চিকিৎসায় কিছু ওষুধ হার্ট অ্যাটাক কিংবা ব্রেন স্ট্রোকের কারণ হয়ে উঠতে পারে বলেও তারা সতর্ক করেছেন। ফিলিপাইনের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় ব্যবহৃত ক্লোরোকুইন করোনা রোগীদের চিকিৎসায় কার্যকর। তবে যাদের হার্টে সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা ঠিক হবে না। এমনকি অন্যদেরও এটি ব্যবহারে হার্টের সমস্যা তৈরি হতে পারে।

তবে চারটি ওষুধ করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে পুরো পট পরিবর্তন করে দিচ্ছে। হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইনের সঙ্গে অ্যাজিথ্রোমাইসিন , টলিসিজুমাব ও বেশি মাত্রার ম্যালাটোনিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করে তুলছে। হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইনের সঙ্গে অ্যাজিথ্রোমাইসিন সরাসরি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।  অন্যদিকে করোনাভাইরাসে শরীরে যে ক্ষতি করে, তা থামিয়ে দেয় টলিসিজুমাব ও বেশি মাত্রার ম্যালাটোনিন।

ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে না পারলেও করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া থেকে ফুসফুসকে বাঁচিয়ে রাখে টলিসিজুমাব ও বেশি মাত্রার ম্যালাটোনিন। 

ম্যানিলা ডক্টরস হসপিটালের চিকিৎসকরা সর্বপ্রথম বেশি মাত্রার ম্যালাটোনিন ব্যবহার করেছেন। তাদের দাবি, গুরুতর অবস্থায় থাকা করোনা রোগীদের এটি দিয়ে সারিয়ে তুলতে পেরেছেন।

সূত্র : লাইফস্টাইল ডট ইনকুইরার

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা