• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

ফিরে দেখা সরকারের সফলতা : ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯  

বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। রুপকল্প ২০২১ এবং একশ’ বছরের ডেল্টা প্লানকে সামনে রেখে দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। উন্নয়নের মহান রুপকার, গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তাধারা ও যুগোপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে দেশ থেকে দূর হয়েছে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-বেকারত্ব। শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাসহ দেশের প্রতিটি সেক্টরে হয়েছে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক পরিবেশনা ‘উন্নয়নের ১১ বছর’।

অখন্ড ভারত বিভক্ত করে ভারত এবং পাকিস্তান নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় ১৯৪৭ সালে রেডক্লিফের মানচিত্র বিভাজন থেকেই উদ্ভব হয় ছিটমহলের। এক দেশের ভুখন্ড থেকে যায় অন্য দেশের অংশ। এতে এক অসহনীয় মানবিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। ১৬২টি ছিটমহল ছিল দুই প্রতিবেশী দেশে। এর মধ্যে ভারতের ১১১টি ছিটমহল ছিল বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ছিল ভারতের অভ্যন্তরে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ছিটমহলে বসবাসরত লোকসংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার এবং ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ছিটমহলের লোকসংখ্যা ছিল ১৪ হাজার। ২৪ হাজার ২৬৮ একর ভূমি নিয়ে দুই দেশের ছিটমহল ছিল। তার মধ্যে ভারতের জমির পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ১৫৮ একর। বাংলাদেশের ছিটমহলের জমির পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ১১০ একর। ভারতীয় ছিটমহলগুলোর অধিকাংশই ছিল বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। এসবের মধ্যে লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি, কুড়িগ্রামে ১২টি ও নীলফামারিতে ৪টি ভারতীয় ছিটমহল ছিল। অপরদিকে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের অবস্থান ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। এর মধ্যে ৪৭টি কুচবিহার ও ৪টি জলপাইগুড়ি জেলায় ছিল। ১৯৭৪ সালে ভূমি বিনিময় নিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে একটি চুক্তি হয়, যা ইতিহাসে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি নামে পরিচিত। বাংলাদেশ চুক্তিটি অনুসমর্থন করলেও ভারত তখন তা করেনি। ২০১১ সালে সীমান্ত চুক্তির সঙ্গে সই হয় প্রটোকল। অনিবার্য হয়ে পড়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রটোকলসহ সীমান্ত চুক্তি কার্যকর করতে ভারতের সংবিধান সংশোধন।

২০১৫ সালের ৫ মে ভারতের রাজ্যসভায় সীমান্ত বিল অনুমোদন করা হয়। এর দু দিন পর ৭ মে ভারতের লোকসভায়ও বিলটি পাস হয়। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত স্থলসীমান্ত চুক্তি ও ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত এ বিষয়ক প্রটোকল বাস্তবায়নের পথ উন্মুক্ত হয়। সীমান্ত বিল পাসের পর ২০১৫ সালের ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফর করেন। সে সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে সীমান্ত বিলের চুক্তি বিনিময় হয়। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়। দীর্ঘদিনের বন্দিত্বের অবসান হয় ভারত ও বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহলের ৫৫ হাজার মানুষের।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা