• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

তিন শর্তে অর্থ পাবে রফতানিমুখী শিল্প

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১ এপ্রিল ২০২০  

তিনটি শর্ত দিয়ে করোনা মোকাবেলায় ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ তহবিল ব্যয়ের নির্দেশনা জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রথম শর্ত হচ্ছে সচল শিল্পপ্রতিষ্ঠান এ অর্থ পাবে।

দ্বিতীয়. এ অর্থ শুধু শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হবে। শেষ শর্ত হচ্ছে সরাসরি শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসেবে তাদের বেতন বাবদ এ অর্থ ব্যাংক থেকে পাঠানো হবে।

মঙ্গলবার অর্থ বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। পাশাপাশি তহবিলের অর্থ বিতরণের নীতিমালা দ্রুত প্রণয়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে একই দিনে চিঠি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

জানা গেছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্যমতে তৈরি পোশাক খাতের ১ হাজার ৪৮টি শিল্পকারখানার ২৪ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা বা ২৮৭ কোটি মার্কিন ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। এসব অর্ডারের বিপরীতে প্রায় ৯১ কোটি পিস পোশাক তৈরি হতো।

এ জন্য এসব কারখানার বিপরীতে ২০ লাখ শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া চামড়া ও চামড়াজাত শিল্প, ফুটওয়্যার, বাইসাইকেলসহ অনেক রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান ক্ষতির মুখে পড়েছে। গত ৮ মার্চ থেকে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস দেখা দেয়।

গত ২৩ দিনে এই ভয়াবহ চিত্র ফুটে ওঠে রফতানি বাণিজ্যে। এ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় এ জন্য একটি গাইডলাইন দিয়ে নির্দেশনা জারি করে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কীভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে তহবিলের অর্থ বিতরণ করবে, সেটি চূড়ান্ত করতে মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে গভর্নর ফজলে কবির বৈঠক করেন। সেখানে অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ৫ হাজার কোটি টাকা তহবিল নির্দেশনা অর্থ বিভাগ থেকে জারি করা হয়েছে। এ টাকা চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের বাজেট থেকে ব্যয় করা হবে। এ জন্য বাজেটে পৃথক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই অর্থ বিতরণ করা হবে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিমালা চূড়ান্ত করবে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, তহবিলের অর্থ ব্যয়ের নির্দেশনায় কয়েকটি শর্ত দেয়া আছে। সেখানে বলা হয়, গত তিন মাস যেসব রফতানিমুখী শিল্প তাদের শ্রমিকদের বেতন নিয়মিত পরিশোধ করেছে এমন শিল্পকে সচল হিসেবে গণ্য করা হবে।

আর তহবিলের অর্থ সব রফতানিমুখী সচল শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকরা পাবেন। তবে তহবিলের অর্থ পেতে শ্রমিকদের জাতীয় পরিচয় পত্রসহ তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বা মোবাইল ব্যাংক হিসাব (বিকাশ, রকেট, নগদসহ অন্যান্য) নম্বরসহ তালিকা দিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করতে হবে।

আবেদন অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ব্যাংক হিসেবে তহবিল থেকে অর্থ বেতন-ভাতা বাবদ সরাসরি পাঠানো হবে। প্যাকেজের এ অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল প্যাকেজের অর্থ মালিক পক্ষ পাবেন ঋণ হিসেবে।

এ জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের দু’শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মালিক ঋণের এই অর্থ পরিশোধের জন্য সময় পাবেন ২ বছর। এর মধ্যে ঋণ গ্রহণের পর গ্রেস পিরিয়ড পাবেন ৬ মাস এবং বাকীয় ১৮ মাসে ১৮টি কিস্তিতে এই টাকা শোধ দিতে হবে ব্যাংককে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ তহবিলে ৫ হাজার কোটি টাকার চলতি বাজেট থেকে জোগান দেয়া হলেও এককালীন সব টাকা একসঙ্গে দেয়া হবে না। এটি বরাদ্দ থাকবে বাজেটে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ বিতরণের গাইডলাইন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছে পাঠাবে। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত মালিকপক্ষ এ তহবিলের অর্থ পাওয়ার জন্য আবেদন করবে ব্যাংকের মাধ্যমে।

প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয় এ টাকা খণ্ড খণ্ড আকারে ছাড় করবে। তবে সরকার এই টাকা দিলেও পরবর্তী সময়ে এই অর্থ ব্যাংকগুলো শিল্পমালিকদের কাছ থেকে আদায় করে সরকারকে ফেরত দেবে। পাশাপাশি যে ২ শতাংশ সুদ আরোপ করা হয়েছে, তা সরকার নেবে না। ব্যাংকগুলো এ তহবিল পরিচালন ব্যয় ও সার্ভিস চার্জ বাবদ ওই অর্থ কেটে রাখবে।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা