• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

তারেকের নির্দেশে বিএনপির দায়িত্ব নিলেন মান্না?

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২০  


কৌশলী রাজনীতিতে পরাজিত হয়ে সাংগাঠনিক মেরুদন্ড ভেঙে পড়া বিএনপি নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এর মাঝেও রয়েছে নেতায় নেতায় কোন্দল। দুরে বসে তারেক জিয়াও সব কিছু সামাল দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। অনেকেই প্রকাশ্যে তারেক জিয়ার নির্দেশনার বিরোধীতা করছেন। এমন অবস্থায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বিষয় আলোচিত হচ্ছে-বিএনপির নেতৃত্বে নতুন কেউ আসছেন কিনা? সম্প্রতি বিভিন্ন সভা সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের মাহামুদুর রহমান মান্নার বক্তব্যে তারই প্রমান পাওয়া যাচ্ছে।  

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত এক সভায় মান্না বলেছেন, ‘বিএনপির হয়ে কাজ করতে রাজি আছি। কিন্তু পুতুপুতু করে কোনো রাজনীতি হবে না। ২০১৮ সালের ভোট চুরি করেছে, ডাকাতি করেছে, ছেড়ে দিয়েছি। এবার কিন্তু ছাড়বো না।’

ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদ প্রমুখ।
সভায় ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে মান্না বলেন, ‘আগামী ৩০ তারিখের ভোট কোনো ভোট নয়। ওই তারিখে ধানের শীষ জিততে পারবেনা। ওরা জিততে দিবে না। যদি ভোট হতো তাহলে নৌকারই খবর থাকতো না। সেই জন্যই সমস্ত দায়িত্ব নিয়েই মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছি।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, দীর্ঘ দিন খালেদা জিয়া জেলে বন্দী ও তারেক জিয়া পলাতক থাকায় নেতৃত্বশূণ্য হয়ে পড়েছে বিএনপি। এ অবস্ধায় দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে প্রকাশ্যে মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় দলীয় কোন কর্মসূচীও ঠিকমত পালন করতে পারেনা তারা। তাছাড়া গত এক দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকায় অনেকেই দল ছেড়ে বেরিয়েও গেছেন। অনেকে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। এ অবস্থায় দিশেহারা অবস্থায় পড়েছে বিএনপি। যে কারণে দলের বাইরের কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো বেশ কিছুদিন ধরে। তারেক জিয়ার নির্দেশে সেভাবেই হয়তো নাগরিক ঐক্যের নেতা মান্নাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বক্তব্যও সেটিই প্রমান করছে। 

সূত্র অনুযায়ি, ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে নাগরিক ঐক্য গড়ে তোলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না। পরে ২০১৭ সালের ২ জুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে নাগরিক ঐক্য। এর আগে ‘নাগরিক ঐক্য’ একটি নাগরিক সংগঠন হিসেবে সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে সোচ্চার ছিল। সে সময় সাংবাদিক এবিএম মূসা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সাংসদ বর্ষীয়ান রাজনীতিক আব্দুল্লাহ সরকার, ও সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা, সাবেক সচিব ও সাংসদ এস এম আকরাম, ড. পিয়াস করিম, সিনিয়র সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, ড. তুহিন মালিক সহ আরো অনেক সিনিয়র নাগরিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমিটিতে ছিলেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর অনেকেই সংগঠন থেকে বেরিয়ে যান। সর্বশেষ ড. কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টে যোগ দিয়ে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেন মান্না। এ মূহুর্তে ঢাকা সিটি নির্বাচনে বিএনপির দুই প্রার্থীর হয়ে সরাসরি মাঠে নেমেছেন তিনি। 

এদিকে মান্না হঠাৎ করে বিএনপির মুখপাত্র হয়ে ওঠায় দলের ভিতর ও বাইরে সমালোচনার ঝড় বইছে। বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা মন্তব্য করছেন, একজন রাজনৈতিক দেউলিয়াকে ভাড়া করে বিএনপির মত একটি বড় দলের নেতৃত্বে বসানো অনেক বড় ভুল হয়েছে। অচিরেই এমন ভুলের বড় মাসুল দিতে হবে বলে মনে করেন তারা।  


 

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা