• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

ঝুঁকি জেনেও কেন এই অপচেষ্টা?

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০১৯  

সরকারি বেসরকারি নানা উদ্যোগের পরও বাল্যবিয়ে বন্ধ হচ্ছে না। এটা খুবই দুঃখজনক যে গণমাধ্যমে প্রায়ই বাল্যবিয়ের খবর আসে। এরসঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে জেল-জরিমানারও বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বাল্যবিয়ে থেমে নেই। বাল্যবিয়ে সমাজের জন্য অভিশাপ। কাজেই যে কোনো মূল্যে এটা বন্ধ করতে হবে।

এবার বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন নাটোরের গুরুদাসপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের যোগেন্দ্রনগর গ্রামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৬) বিয়ে দিচ্ছিল তার পরিবার। খবরটি ফোনে জানতে পারেন ইউএনও তমাল হোসেন। এরপর তিনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খানকে ওই বাড়িতে পাঠান। তিনি গিয়ে স্টেজে কনে সেজে বসে থাকা কনের ভাবি ও তার ভাইকে উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে নিয়ে যান। পরে বাল্যবিয়ের চেষ্টার জন্য কনের ভাইকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত ওই কিশোরীকে বিয়ে দেয়া হবে না মর্মে মুচলেকা নেয়া হয়। গুরুদাসপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রশাসন সোচ্চার রয়েছে। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।

‘কন্যাশিশুরাই বাল্যবিয়ের শিকার হয় বেশি। দারিদ্র্য, অসচেতনতা, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, যৌন হয়রানি ও কন্যাশিশুর প্রতি নেতিবাচক মনোভাবের কারণে কন্যাশিশুদের বিয়ে হচ্ছে বেশি। পাশাপাশি ভুয়া জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বাড়ানোর ঘটনাও ঘটছে। দেখা যায়, সন্তান জন্ম দেওয়া ও লালন-পালন করা অল্প বয়সী মায়েদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এই অবস্থায় মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ছে।’

আইন অনুযায়ী পুরুষের বিয়ের বয়স ২১ বছর, নারীর ১৮ বছর। ব্যতিক্রম হলে বিয়ের সঙ্গে জড়িত বর-কনের অভিভাবক, আত্মীয়, স্থানীয় কাজিসহ সবার শাস্তির বিধান রয়েছে। জড়িত পুরুষদের এক মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। বর ও কনে দুজন নাবালক হলে তাদের কোনো শাস্তি হবে না। বর সাবালক ও কনে নাবালিকা হলে ছেলের এক মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা এক হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

কন্যাশিশুরাই বাল্যবিয়ের শিকার হয় বেশি। দারিদ্র্য, অসচেতনতা, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, যৌন হয়রানি ও কন্যাশিশুর প্রতি নেতিবাচক মনোভাবের কারণে কন্যাশিশুদের বিয়ে হচ্ছে বেশি। পাশাপাশি ভুয়া জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে বয়স বাড়ানোর ঘটনাও ঘটছে। দেখা যায়, সন্তান জন্ম দেওয়া ও লালন-পালন করা অল্প বয়সী মায়েদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এই অবস্থায় মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ছে।

নানা ক্ষেত্রেই এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে-এমন স্বপ্ন দেখছি আমরা। কিন্তু বাল্যবিয়ে এর মধ্যে বিরাট এক বাধা। এ সমস্যা সমাধানে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে সবচেয়ে বেশি। বিয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে গেল-এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া আর্থ সামাজিক নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ জন্য বাল্যবিয়ে বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা ও মানসিকতার পরিবর্তনও অত্যন্ত জরুরি।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা