• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

ক্ষুধার্ত কুকুর-বিড়ালের পাশে ব্যক্তি-সংগঠন

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০২০  

মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সংকটে মানুষের অস্তিত্ব। তবে এর প্রভাব থেকে রক্ষা পায়নি কুকুর-বিড়ালের মতো অবলা প্রাণীগুলোও। বিশেষ করে অলিগলিতে থাকা বেওয়ারিশ এবং ছিন্নমূল এ প্রাণীগুলো ভুগছে খাদ্য সংকটে। এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো পদক্ষেপ দেখা না গেলেও ব্যক্তি এবং সাংগঠনিক উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসছেন অনেকেই।

সাধারণত বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে থাকা কুকুরগুলো পরিবেশ থেকে পাওয়া খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে। বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকান, হোটেল ও বাসাবাড়িতে বেঁচে যাওয়া বা উচ্ছিষ্টই কুকুর-বিড়ালগুলোকে খাদ্য যোগায়। পরিবেশের পাশাপাশি বাসাবাড়িতে উঁকিঝুঁকি মেরে খাবারের সন্ধান করে বিড়াল। এর বাইরে কেউ কেউ নিজ উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের খাবার দেন এসব প্রাণীকে।

তবে করোনা ভাইরাসের কারণে এক রকম লকডডাউন পরিস্থিতিতে বিপাকেই পড়েছে এসব প্রাণী। বিভিন্ন হোটেলসহ খাবারের দোকান বন্ধ থাকায় পরিবেশ থেকে খাবার পাচ্ছে না প্রাণীগুলো। অন্যদিকে বাসাবাড়ি থেকেও উচ্ছিষ্ট বা বেঁচে যাওয়া খাবার পাচ্ছে না কুকুরগুলো।

এমন পরিস্থিতিতে এসব প্রাণী যে খাদ্য সংকটে চরম দুঃসময় পার করছে তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হতে হয় না। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এগুলোর প্রায় নিস্তেজ অবস্থা চোখে ধরা পড়ে। এক সময়ের চঞ্চল এ প্রাণীগুলো এখন ক্ষুধার্ত হয়ে সড়কে পড়ে আছে।

এসব প্রাণীর সাহায্যার্থে এখনো কোনো সরকারি সংস্থা এগিয়ে না আসলেও অনেক এলাকাতেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকে এগিয়ে আসছেন। অনেকেই আবার সাংগঠনিকভাবেও কাজ করছেন এসব প্রাণীর জন্য। আর এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো।

রাজধানীর উত্তরা এলাকার বাসিন্দা এবং অভিনয় শিল্পী জুঁই জান্নাত বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে আমরা মানুষেরাও যেমন বাঁচার চেষ্টা করছি, তেমনি এ প্রাণীগুলোকেও আমাদের বাঁচাতে হবে। কারণ এগুলো এ পরিবেশেরই অংশ এবং বাস্তুসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিছুদিন যাবত আমি আমার এলাকায় ছিন্নমূল কুকুর-বিড়ালগুলোর মধ্যে খাবার বিতরণের চেষ্টা করছি। খিচুরি, বিস্কুট বা রুটি দিচ্ছি। তার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দিয়েছি। মিডিয়ার আকর্ষণ বা ফেসবুক সেলেব্রিটি হওয়ার জন্য না বরং অন্যদেরও উৎসাহিত করার জন্য। আমি নিজে ওদের জন্য যা পারি করছি। অন্যরাও যেন এগিয়ে আসে, এ বার্তা দিতে চাই।

মিরপুর এলাকায় কুকুর-বিড়ালের মধ্যে খাবার বিতরণ করছেন গৃহবধূ ফাহিমা নূর তন্বী ও তার দল। সবাইকে এসব প্রাণীর সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যতটুকু পারেন এদের খাবার দিন। কারণ মানুষ নিজের খাবার নিজে বানিয়ে বা চেয়ে খেতে পারে। কিন্তু অবলা প্রাণীগুলো এসবের কিছুই পারে না; এমনকি চাইতেও পারে না। তাই সবার উচিত এদের সাহায্যে এগিয়ে আসা।’

অন্যদিকে এসব প্রাণীর খাবার যোগান দিতে ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন কমিউনিটি গ্রুপও এগিয়ে আসছে। এদের মধ্যে ‘এক বেলার খাবার বোবা প্রাণীদের জন্য – ফুড ফর স্ট্রিট অ্যানিমেলস’ এবং ‘ডগ লাভারস অব বাংলাদেশ’ অন্যতম। ফেসবুক কাজে লাগিয়ে সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবার সহযোগিতায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কুকুর-বিড়ালদের মধ্যে খাবার বিতরণ করছে সংগঠনটি।’

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা