• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

ফুটবলের মহা আয়োজন শুরুর অপেক্ষায়

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২২  

কাতার বিশ্বকাপের থিম সং ‘বেটার টুগেদার’ শোনা হয়েছে? যদি শোনা না থাকে তাহলে একবার শুনেই নিন না! বিশ্বকাপের ঝাঁজ খুব একটা পাবেন না। কিন্তু ঐক্যের ডাক পাবেন যা এখন অশান্ত দুনিয়ায়  শান্তির বার্তা দিয়ে যাচ্ছে।

হিপ হপ গায়ক ত্রিনিদাদ কারডোনার লিখা ও গাওয়া গানের কয়েক লাইন ছিল এরকম, ‘জীবনে ওঠা-নামা থাকবে তাতে আমাদের কি করার আছে? ///আমরা রুক্ষ্ণ ও কঠিন পথকে মসৃণ করে সাজিয়েছি///আমরা আনন্দ, উৎসবের ছন্দ খুঁজে পেয়েছি///কখনো দুঃখের নীল সাজবো না যখন আমরা একসঙ্গে থাকি///আপনি জানেন আমরা একসঙ্গে ভালো থাকি//আর অপেক্ষায় রাখতে চাই না///আপনি জানেন আমরা একসঙ্গে থাকি//সেই সময়টা আজই এবং এখনই।’

রাশিয়া বিশ্বকাপের পর্দা নামার পর গত চার বছরে যে প্রশ্নটা ফুটবল বিশ্ব সবচেয়ে বেশিবার করেছে তা হলো, কাতার কি সত্যিই বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারবে? মরুর দেশে বিশ্বকাপ। ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা যেবার কাতারকে বেছে নেয় তখন থেকেই ইউরোপিয়ান দেশগুলো কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে রীতিমত নাক সিটকানো শুরু করে। প্রথমত, কাতারের গরম। দ্বিতীয়ত, ইউরোপিয়ান সংস্কৃতির চর্চা।

কিন্তু সব জল্পনা কল্পনা শেষ করে কাতার প্রথম দেশ হিসেবে উপদ্বীপে এককভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে। রোববার স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডর ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে ২২তম ফুটবল বিশ্বকাপের। এরপর কাতারের আট স্টেডিয়ামে একে একে মাঠে নামবে অংশগ্রহণকারী বাকি ৩০ দল।

বছরখানেক আগে লিভারপুলের ম্যানেজার ইয়ের্গুন ক্লপ এক বক্তব্যে বলেছিলেন,‘ এটা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আয়োজন এবং যা দরজায় কড়া নাড়ছে। ১২ বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে কি হবে না হবে। কিন্তু কেউই দীর্ঘ সময় ধরে চিন্তা করেনি। এখন যখন বিশ্বকাপ শুরুর অপেক্ষায় তখন কেউ তা পরিবর্তন করতে পারবে না।’

মূলত কাতারের গরম নিয়েই যত আলোচনা। তপ্ত মরুর বুকে উত্তপ্ত ফুটবল কতটা জমিয়ে তুলবে তা নিয়ে আলোচনা থেমে নেই। মেসি, নেইমার, রোনালদো, এমবাপ্পেদের পায়ের জাদুতে বুঁদ হবে বিশ্ব। কিন্তু কন্ডিশনই যেন সব বাধা। তবে উৎসব কি থেমে আছে? সার্জিও অ্যাগুয়েরো গতকাল কাতার পৌঁছেছেন। যে বিমানে উঠেছিলেন সেখানে ব্রাজিল সমর্থকরা রীতিমত উৎসব করেছে। এটা তো শুধু একটি উদাহরণ। গত এক সপ্তাহে কাতারে পৌঁছেছেন বিশ লাখেরও বেশি সমর্থক। ৩২ দেশের সমর্থকরা প্রিয় দলের খেলা মাঠে বসে বা মাঠের বাইরে বড় পর্দায় বসে উপভোগ করবেন এ তাদের একমাত্র আনন্দ।

কাতার ও ইকুয়েডরের ম্যাচটি হবে আল খোর স্টেডিয়ামে। এর আগে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় শুরু হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান চলবে টানা ৪৫ মিনিট। যেখানে এক সঙ্গে ৬০ হাজার দর্শক বসতে পারবেন।

কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ করে দিয়েছিলেন স্লেপ ব্লাটার। ফিফার সাবেক প্রেসিডেন্ট নিজের এই সিদ্ধান্তে অনুতপ্ত তা কিছুদিন আগেই বলেছেন এভাবে,‘আমার কাছে সব কিছু পরিস্কার, কাতারকে পছন্দ করা ভুল হয়েছে। খুব বাজে সিদ্ধান্ত। কাতার ছোট দেশ। ফুটবল এবং বিশ্বকাপ বড় দেশের জন্য।’

এক যুগ আগে মরুর দেশকে বেছে নিয়ে ব্লাটার অসম্ভবকে সম্ভবকে করার কথাও বলেছিলেন। কাতার তা করে দেখিয়েছেও। নান্দন্দিক স্টেডিয়াম, উচ্চাভিলাষী ও আধুনিক  সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছে ঠিকই। কিন্তু নিজেদের কড়া ধর্মীয় অনুশাসন, সংস্কৃতি ও সামাজিকতার বেড়াজালে ফুটবলপ্রেমিদের আনন্দে, পাগলামিতে  বেড়ি পরিয়ে দিয়েছে আয়োজকরা। কি করা যাবে কি করা যাবে না মুখস্থই থাকতে হবে সমর্থকদের। নয়তো কড়া শাসন কায়েম করাও হবে।

সব মাথায় নিয়েই রোববার মাঠে গড়াচ্ছে গ্রেটেস্ট শো অব আর্থ। চার বছর পর আবার ফুটবলের মিলনমেলা। এ মিলনমেলা চলবে এক মাস। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের বিশ্বকাপের দিকে চোখ থাকবে প্রায় ৫০০ কোটি মানুষের। যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি। ৩২ দলের এই লড়াইয়ে শেষ হাসিটা যারা হাসবে তারা চার বছরের রাজত্ব পেয়ে যাবে। পুরোনো কারো মাথায় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট উঠবে নাকি নতুন কেউ হবেন রাজা? সময়ের কাছেই প্রশ্নটা তোলা থাক।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা