• শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ৮ ১৪৩০

  • || ০৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

সেই ঐতিহ্যবাহী ‘খড়ম’ এখনও ব্যবহার হচ্ছে যে মসজিদে

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

‘খড়ম’। যা এক প্রকার কাঠের পাদুকা। হিন্দি ‘খড়ৌঙ’ শব্দ থেকে বাংলায় খড়ম শব্দটির উৎপত্তি। সংস্কৃতে খড়ম ‘পাদুকা’ নামে পরিচিত। পায়ের মাপে কাঠ কেটে সামনের দিকে কাঠের গুটি বসিয়ে খড়ম তৈরি করা হয়। 

খড়ম ভারতীয় উপমহাদেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশেও একসময় এর প্রচলন ছিল।

তবে দিন দিন খড়ম বিলীন হয়ে গেলেও রংপুরের ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজের কেন্দ্রীয় মসজিদে এখনও খড়মের ব্যবহার হচ্ছে।

খড়ম পায়ে হাঁটার সময় চটাস চটাস শব্দ হয়। কিছুকাল আগেও খড়মের শব্দে গৃহস্থরা বুঝতে পারতেন তাদের বাড়িতে কেউ আসছে। তা ছাড়া বাড়িতে কুটুম এলেও খড়ম ও পানির ঘটি এগিয়ে দিয়ে তাকে স্বাগত জানানোর প্রচলন ছিল। বর্তমানে প্লাস্টিক, বার্মিজ ও চাইনিজ জুতার প্রচলনে সেই দৃশ্য এখন হারিয়ে গেছে।

কারমাইকেল কলেজ সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। কলেজের মসজিদের ওজুখানার পাশে কয়েক জোড়া খড়ম রেখে দেওয়া আছে। নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা ওজুখানায় এ খড়ম ব্যবহার করে থাকেন।

কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কলেজের মসজিদে প্রথম খড়ম দেখেছি। প্রথম যেদিন দেখি সেদিন অনেকক্ষণ পায়ে দিয়ে হাঁটাহাঁটি করেছি। এরপর নামাজ পড়তে গেলে প্রায় দিনই খড়ম পায়ে দিয়েছি। বাড়িতে বাবা বেঁচে থাকতে শুনছিলাম তাদের সময় মানুষ খড়ম বা কাঠের জুতা ব্যবহার করত। এ মসজিদে নিজ চোখে দেখেছি ও পরেছি’।

বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফয়সাল বলেন, ‘দাদা-দাদির কাছে আগে কাঠের জুতার কথা অনেক শুনেছি, কিন্তু কখনও দেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু আমাদের স্কুলের মসজিদের অজুখানায় এখন কাঠের জুতা ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে প্রাচীন একটা ঐতিহ্যের সঙ্গেও আমরা পরিচিত হলাম’।

মসজিদের ইমাম খাইরুল বাশার জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে এ মসজিদের ওজুখানায় খড়মের ব্যবহার শুরু হয়। তার আগে বিভিন্ন চটি জুতার ব্যবহার হলেও কয়েক দিনের মধ্যে হারিয়ে যেত। এরপর খড়ম ব্যবহার শুরু হয়। এখন মানুষ এ জুতা ব্যবহার করছে।

উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে কারমাইকেল কলেজ জামে মসজিদটি স্থাপিত হয়। কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও আশপাশের এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীরা এ মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন প্রতিনিয়ত।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা