• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

ছাগল পালনের টাকায় ওমরাহ, ১৫ বছরের স্বপ্নপূরণ বৃদ্ধের

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২৩  

৮২ বছর বয়সী আবদুল কাদির বখশ। জীবনের পড়ন্ত বেলায়ও পিছু ছাড়েনি অভাব-অনটন। তাই পেটের তাগিদে ছাগল চরানোর কাজ করেন পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের এই বাসিন্দা। শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও তার অন্তর ছিল আল্লাহর ভালোবাসায় ভরপুর। চরম অসহায়ত্বের মধ্যেও মনে পুষেছিলেন পবিত্র কাবাঘর ও রওজা শরিফ দেখার স্বপ্ন। তাই স্বপ্ন পূরণে যতটুকু সম্ভব সঞ্চয় শুরু করেন। সামান্য পরিমাণ হলেও এই ধারা অব্যাহত রাখেন তিনি।

অতঃপর দীর্ঘ ১৫ বছরের জমানো অর্থে তিনি পবিত্র ওমরাহ পালন করেন। মক্কায় তার সঙ্গে কোনো গাইডের ব্যবস্থা ছিল না। বেলুচি ছাড়া অন্য কোনো ভাষাও জানেন না।

গত রমজান মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে একজন বৃদ্ধকে পবিত্র মসজিদে নববীতে লাঠি হাতে একাকী ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। সাদা জুব্বা পরা এই বৃদ্ধের দৃষ্টিশক্তিও বেশ ক্ষীণ। হাঁটার ধরন থেকে মনে হচ্ছিল তিনি কাউকে হারিয়েছেন বা কিছু খুঁজে ফিরছেন। তার সাদাসিধে চলাফেরা ও সরল ব্যবহার নজর কাড়ে সবার।

ভাইরাল ভিডিওটি কয়েক মিলিয়ন ভিউ হয়। এমনকি সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের উপদেষ্টা তুর্কি আল-শেখ তার খোঁজ চেয়ে টুইট করেন।

এদিকে কোনো ধরনের মুঠোফোন না থাকায় সেই ভিডিও সম্পর্কে একদম বেখবর সেই বৃদ্ধ। ওমরাহ শেষ করে গত শনিবার (২২ এপ্রিল) নিজ গ্রাম গোথ হাজি রহিম গ্রামে ফিরে যান। গাছের পাতা ও ঘাস দিয়ে তৈরি ঝুপড়িতে তাকে অভিনন্দন জানান পরিচিতজনরা।

আবদুল কাদির বখশ বলেন, আমার পাঁচ সন্তান। ডিম ও লাকড়ি বিক্রি করেই জীবন চালাতে হয়। আমাদের বসবাসের কোনো ঘর নেই; থাকি ঝুপড়িতে। অভাব-অনটনে আমাদের দিন পার হয়। ১৫ বছর ধরে আমার মদিনায় যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। তবে কোনো অর্থকড়ি ছিল না। আমি আল্লাহর কাছে সাহায্যের জন্য দোয়া করেছি। এরপর ছাগল পালন করে অর্থ সঞ্চয় করি এবং পাসপোর্ট করে ওমরাহ ভিসার আবেদন করি।

তিনি আরো বলেন, প্রথমবার মক্কা দেখে আমার খুশির সীমা ছিল না। আমি মনে করি আমার সব উদ্বেগ চলে গেছে। আমার অন্তর সন্তুষ্ট। আমার কোনো অভাব নেই। কারণ মক্কা ও মহানবী (সা.)-এর রওজা জিয়ারতের বাসনা মঞ্জুর হয়েছে।

ঐ বৃদ্ধ জানান, তার সব দোয়া কবুল করা হয়েছে।

ওমরাহ থেকে ফেরার পর আবদুল কাদির বখশ ভবিষ্যতে হজ পালনের জন্য অর্থ সঞ্চয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কারণ হজ করাই তার সবচেয়ে বড় ইচ্ছা।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা