• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

মিসওয়াক প্রিয় নবীর সুন্নত

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১  

মিসওয়াক করা আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এর প্রিয় একটি সুন্নত। আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মিসওয়াক মুখের পবিত্রতা, রবের সন্তুষ্টির মাধ্যম।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২৮৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা)

মিসওয়াক ইসলামের উন্নত রুচি ও পরিচ্ছন্নতার পরিচায়ক। মুমিনের ভেতরটা যেমন স্বচ্ছ ও কলুষতামুক্ত থাকবে তেমনি তার বাহিরও হবে সুন্দর ও পরিপাটি, পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন। সবধরনের কদর্যতা ও মন্দ স্বভাবমুক্ত।

পাক-পবিত্রতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মুমিনের অনন্য ও স্বভাবজাত রুচি-বৈশিষ্ট্যের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। হাদীস শরীফে এসেছে, ‘দশটি বিষয় স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত। মোচ খাটো করা, দাড়ি লম্বা রাখা, মিসওয়াক করা...।’ (-সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৬১) এই হাদীসে মিসওয়াককে স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য ও গুণের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্বভাবজাত বিষয় তো এমন, যা জীবনের সাথে মিশে থাকে। যা ছুটে যাওয়ার মতো নয়।

সাধারণ দৃষ্টিতে মনে হতে পারে, মিসওয়াক একটি ছোট আমল। কিন্তু প্রতিদান কত বড়- আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি। এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে মুমিনের জীবনে?

আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টিই তো মুমিনের সবচেয়ে বড় চাওয়া ও পরম পাওয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর আল্লাহর সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড় বিষয়।’ (সূরা তাওবা (৯) : ৭২) যার প্রতি মালিক সন্তুষ্ট, দুনিয়া-আখেরাত উভয় জাহানের কল্যাণই তো তার সাধিত হয়ে গেল। কিন্তু আফসোসের বিষয় হল, এত সহজসাধ্য ও মূল্যবান সুন্নতটি আমাদের কারো কারো জীবনে অবহেলিত। বলতে গেলে আমভাবেই মিসওয়াকের সুন্নতটি আমাদের থেকে ছুটে যাচ্ছে।

অনেক নামাজি আছেন, যারা মিসওয়াক যে অযুর সময়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত- তা-ই জানেন না। আরেক শ্রেণি এ সুন্নতের গুরুত্ব জানেন ঠিকই, কিন্তু আমলের ক্ষেত্রে তাদের বেশ অবহেলা লক্ষ করা যায়। অথচ মিসওয়াকের গুরুত্ব কী অপরিসীম তা হাদীস এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) এর বাস্তব আমল থেকে আমরা সহজেই অনুধাবন করতে পারি। এখানে মিসওয়াকের গুরুত্ব  সম্পর্কিত দুয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হল।

ওয়াসিলা ইবনুল আসকা রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-‘আমাকে মিসওয়াকের আদেশ দেয়া হয়েছে। আমার আশঙ্কা হতে লাগল,  না জানি তা আমার উপর ফরয করে দেয়া হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬০০৭) অপর বর্ণনায় তিনি বলেন-‘আমাকে মিসওয়াকের আদেশ করা হয়েছে। আমার ধারণা হতে লাগল, এ সম্পর্কে আমার উপর কুরআন নাযিল হবে বা (বলেছেন,) ওহী নাযিল হবে।’ -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৩১২২

উপরোক্ত বর্ণনা থেকে বোঝা গেল, মিসওয়াকের প্রতি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে কী পরিমাণ তাগিদ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) উক্ত নির্দেশ কীভাবে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করেছেন তার দুয়েকটি নমুনা উদ্ধৃত করছি। এগুলো থেকে আমরা অনুধাবন করতে পারব- মিসওয়াকের সঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সম্পর্ক কত গভীর ছিল:

ঘরে প্রবেশ করে মিসওয়াক:
আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন-‘রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন ঘরে প্রবেশ করতেন প্রথমে মিসওয়াক করতেন।’ (সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৩) শুরাইহ (রাহ.) বলেন-‘আমি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে কোন্ কাজটি করতেন? উত্তরে তিনি বলেন, প্রথমে মিসওয়াক করতেন।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৩

শয্যার পাশে মিসওয়াক :
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘুমানোর সময় মিসওয়াক পাশে রাখতেন। ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে প্রথমেই তিনি মিসওয়াক করতেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৫৯৬৯

অযুর পূর্বে মিসওয়াক: 
আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন-‘দিনে বা রাতে যখনই রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘুম হতে জাগ্রত হতেন অযুর পূর্বে মিসওয়াক করে নিতেন।’ -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৪৯০০

মৃত্যুর আগমুহূর্তেও মিসওয়াক :
আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-‘রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার ঘরে আমার ‘পালা’র দিনে এবং আমার বুকে মাথা রাখা অবস্থায় ইন্তিকাল করেন। তিনি অসুস্থ হলে আমাদের মধ্যকার কেউ দোয়া পড়ে তাকে ঝাড়ফুঁক করতেন। আমি তাকে ঝাড়ফুঁক করছিলাম এসময় আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর আগমন করল। তার হাতে মিসওয়াকের একটি তাজা ডাল ছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.) তখন সেদিকে তাকালেন। আমি বুঝতে পারলাম যে, তিনি মিসওয়াকের প্রয়োজন বোধ করছেন। তখন আমি সেটি নিয়ে চিবিয়ে প্রস্তুত করে তাকে দিলাম। তিনি এর দ্বারা সুন্দরভাবে মিসওয়াক করলেন, যেমনটি তিনি (সুস্থতার সময়) করে থাকেন। অতঃপর তিনি তা আমাকে দিলেন। পরক্ষণই তার হাত ঢলে পড়ল। আল্লাহ তায়ালা আমার থুথুকে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর থুথুর সঙ্গে মিলিয়ে দিলেন তার এ দুনিয়ার শেষ দিনে এবং আখিরাতের প্রথম দিনে।’  (সহীহ বুখারী হাদীস ৪৪৫১)

এ হাদীস থেকে বোঝা গেল প্রিয় নবী (সা.) এর নিকট মিসওয়াক কী পরিমাণ প্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তেও এ সুন্নাহর প্রতি কেমন আকর্ষণ ও ভালোবাসা ছিল। একজন নবী প্রেমিকের এ সুন্নাহর অনুসরণ এবং নিজের জীবনে বাস্তবায়নের জন্য এর চেয়ে বড় শিক্ষণীয় বিষয় আর কী হতে পারে?

আমরা তো মিসওয়াককে শুধু ওযু-নামাজের আমল মনে করে থাকি। সেটাতেও কত উদাসীনতা লক্ষ করা যায়। অথচ প্রিয় নবীর  জীবন থেকে বুঝা যায় মিসওয়াকের আমল শুধু ওযু-নামাজের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। 

মিসওয়াকের প্রতি সাহাবীদের গুরুত্ব :
পূর্বোক্ত হাদীসে লক্ষ করা গেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর গোটা জীবনে মিসওয়াকের প্রতি মহব্বত ও আকর্ষণ কী পরিমাণ ছিল। মৃত্যু পর্যন্ত মিসওয়াকের সঙ্গে কী মায়াবী সম্পর্ক ও টান ছিল। এখানে দেখব তার প্রিয় সাহাবাদের প্রতি এ সুন্নাহ পালনের গুরুত্ব প্রদান। আর  সাহাবাদের উক্ত নির্দেশ পালনের কিছু বাস্তব নমুনা। যা আমাদের আমলের জন্য  বড় সহায়ক হবে আশা করি ইনশাআল্লাহ।

সহীহ বুখারীতে আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তোমাদেরকে অধিকমাত্রায় মিসওয়াকের নির্দেশ দিয়েছি। অর্থাৎ তোমরা বেশি বেশি মিসওয়াক করো।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস ৮৮৮)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন-আমাদেরকে মিসওয়াকের প্রতি গুরুত্বের সাথে নির্দেশ দেয়া হত। আমাদের ধারণা হতে লাগল যে, এ সম্পর্কে হয়ত শীঘ্রই কোনো আয়াত নাযিল হবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ১৮০৪) রাসূলুল্লাহ (সা.) এর এ আদেশ সাহাবায়ে কেরাম কীভাবে পালন করেছেন লক্ষ করুন।

সালেহ ইবনে কায়সান (রাহ.) বলেন-উবাদা ইবনে সামেত রা. এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অন্য সাহাবীগণ চলাফেরা করতেন। তারা কানের উপর মিসওয়াক গুঁজে রাখতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ১৮০৫) তারা এজন্য কানের সঙ্গে মিসওয়াক গুঁজে রাখতেন যে, অযু নামাজের ক্ষেত্রে কোনো অবস্থায়ই যেন মিসওয়াকের আমল  ছুটে না যায়। সুনানে আবু দাউদে যায়েদ বিন খালেদ আলজুহানী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি-আমার উম্মতের জন্য কষ্টের আশঙ্কা না হলে তাদের উপর মিসওয়াককে প্রতি নামাযের জন্য ফরয করে দিতাম। আবু সালামা (রাহ.) বলেন, আমি যায়েদ (রা.)-কে দেখেছি, তিনি মসজিদে বসে থাকতেন, আর মিসওয়াক তার কানের ঐ স্থানে থাকত, যেখানে লেখকের কলম থাকে। অতঃপর যখনই তিনি নামাজের জন্য যেতেন মিসওয়াক করে নিতেন। (সুনানে আবু দাউদ)

আলী (রা.) মিসওয়াকের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে বলেন- ‘আমাদেরকে মিসওয়াকের আদেশ দেয়া হয়েছে। ’এরপর তিনি কী চমৎকার বলেছেন-বান্দা যখন নামাযে দাঁড়ায় তার নিকট ফেরেশতা আগমন করে। অতঃপর কোরআন মনোযোগসহ শোনার জন্য তার পেছনে দাঁড়ায় এবং নিকতবর্তী হতে থাকে। এভাবে শুনতে থাকে আর কাছে আসতে থাকে। এমনকি ফেরেশতা তার মুখ তিলাওয়াতকারীর মুখ বরাবর রাখে। এ অবস্থায় সে যখন কোনো আয়াত তিলাওয়াত করে তা ফিরিশতার ভেতরে চলে যায়। (সুনানে কুবরা, বাইহাকী, হাদীস ১৬২; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ১৯৩৭; আলআহাদীসুল মুখতারাহ, যিয়া আলমাকদিসী, হাদীস ৫৮০)

মিসওয়াক কতটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আলী (রা.)এর উপরোক্ত বর্ণনা থেকে তা উপলব্ধি করা যায়। তিনি প্রথমে মিসওয়াকের কথা বলেছেন। এরপর ফিরিশতাগণের তিলাওয়াত শ্রবণের কথাটি উদ্ধৃত করেছেন। ফিরিশতাগণ বড় পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রুচি ও বৈশিষ্ট্যের মাখলুক। দুর্গন্ধ ও অপরিচ্ছন্নতা তাদের স্বভাব-বহির্ভুত। তাই নামাজের জন্য যখন দাঁড়াবে এর পূর্বে ওযুতে ভালোভাবে মিসওয়াক করে পবিত্র-পরিচ্ছন্ন হয়ে দাঁড়াবে।

এখানে মাত্র দুয়েকটি হাদীস-আসার উল্লেখ করা হল। অন্যথায় হাদীস-আসারের কিতাবে সাহাবা-তাবেয়ীনের মিসওয়াকের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক সংক্রান্ত বহু বর্ণনা উদ্ধৃত হয়েছে। 

জুমার দিনে মিসওয়াক :
আমরা হাদীস শরীফে জুমার দিন গোসল করা সুন্নত জেনে এসেছি। কিন্তু আমরা কখনো কি খেয়াল করেছি জুমার দিন আমাদের শুধু গোসলেরই বিধান দেয়া হয়নি, বরং হাদীসে মিসওয়াকেরও কথাও এসেছে। সহীহ মুসলিমের হাদীসটির প্রতি লক্ষ করুন। আবু সায়ীদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির গোসল ও মিসওয়াক করা কর্তব্য এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সে সুগন্ধিও ব্যবহার করবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৮৪৫

অযুর সময় মিসওয়াক করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত :
হাদীস শরীফে এসেছে, বান্দা যখন নামাজে দাঁড়ায় সে তখন রবের সাথে কথাপোকথন করে। ফিরিশতাগণ জামাতের নামাযে তার সাথে কাতারবন্দি হয়ে দাঁড়ায়। তার তিলাওয়াত খুব নিকট থেকে শোনে। এজন্য নামাযে দাঁড়ানোর পূর্বে বান্দার কর্তব্য হল, পাকসাফ হয়ে সবধরনের পবিত্রতা অর্জন করে নামাজে দাঁড়ানো। নোংরা ময়লা পোশাক নিয়ে দুর্গন্ধময় মুখ ও শরীর নিয়ে প্রভুর  সম্মুখে দাঁড়ানো কিছুতেই কাম্য নয়। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ (সা.) অযুতে মিসওয়াকের এত গুরুত্ব প্রদান করেছেন। কোনো কোনো বর্ণনার ভাষা লক্ষ করুন-আমার উম্মতের উপর যদি (অধিক) কষ্টের আশঙ্কা না হত তাহলে আমি তাদের উপর প্রত্যেক অযুর সময় মিসওয়াক আবশ্যকীয় করে দিতাম। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৯৯২৮)  

অপর বর্ণনায় এসেছে-প্রত্যেক নামাজের সময় মিসওয়াক আবশ্যকীয় করে দিতাম। (সহীহ বুখারী,  ৮৮৭ ) হাদীস শরীফে উত্তমরূপে ওযু করার কথা বলা হয়েছে। উত্তমরূপে ওযু করার দ্বারা আমাদের গুনাহগুলো ঝরে যায়। সহীহ মুসলিমে উসমান রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযু করল তার   শরীর থেকে গুনাহসমূহ বের হয়ে গেল। এমনকি তা আঙুলের অগ্রভাগ দিয়ে তা  বের হয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৪৫) উত্তমরূপে ওযু তো তখনই হবে, যখন ওযুর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুন্নতসহ  যথাযথভাবে আদায় করা হবে। আর মিসওয়াক অযুর গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত।  উত্তমরূপে অযু আদায় হওয়ার জন্য মিসওয়াক জরুরি অনুষঙ্গ।

অযুতে কুলি করা নাকে পানি দেয়া সুন্নত। তেমনি ওযুর সময় মিসওয়াকও একটি সুন্নত। কুলি ছুটে গেলে বা নাকে পানি দিতে ভুলে গেলে প্রশ্ন করা হয় অযু হবে কি না? অথচ মিসওয়াক নিয়মিত ছুটে  যাচ্ছে কি না- এ প্রশ্ন কি মনে জাগে! এ অবস্থার সংশোধন হওয়া জরুরি।

মিসওয়াকের কথা আসলে কোনো কোনো ভাই ব্রাশের প্রসঙ্গ টেনে আনেন এবং বলেন, ব্রাশ দ্বারা কী মিসওয়াকের সুন্নত আদায় হবে না? সংক্ষেপে এর উত্তর হল, মিসওয়াকের সুন্নত তো সুনিশ্চিতভাবে মিসওয়াক দ্বারাই আদায় হবে। এজন্য যে যে ক্ষেত্রে মিসওয়াক সুন্নত সেখানে মিসওয়াকই করা উচিত। এক্ষেত্রে অন্য কিছুকে মিসওয়াকের নিশ্চিত বিকল্প বলা যায় না। হাঁ ব্রাশ দ্বারা যেহেতু দাঁত পরিস্কার হয় তাই কেউ যদি ব্রাশ করতে চায় তাহলে ঘুমানোর আগে বা ভারি খাবারের পর করতে পারে।  দ্বিতীয়ত ব্রাশ তো করা হয়ে থাকে সাধারণত এক-দু’বার। সকালে ও রাতে। ওযুর সাথে পাঁচ ওয়াক্ত ব্রাশ করার জন্য পকেটে ব্রাশ ও পেস্ট রাখে কে? তাই মিসওয়াকের সঙ্গে ব্রাশের প্রসঙ্গ টেনে আনা কোনোভাবেই ঠিক নয়। সুন্নাহর উপর আমল সুন্নাহসম্মত পদ্ধতিতে হওয়া চাই। তবেই পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ সুন্নাহ পালনের নূর ও বরকত

আসুন প্রিয় নবীর এ সুন্নতটিকে প্রিয় করে নিই। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করি। ফিরিশতাদের প্রিয় হই। আল্লাহ ও রাসূলের প্রিয় হই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা