• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

কলারোয়ায় ভাইস চেয়ারম্যানের নামে ৯০ লাখ টাকার চাঁদাবাজি মামলা

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২৩  

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ভাই চেয়ারম্যান কাজী আসাদুজ্জামান শাহাজাদার বিরুদ্ধে ৯০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের দাউদ আলী গাজীর ছেলে তরিকুল ইসলাম ওই মামলাটি দায়ের করেন। তিনি গত বুধবার কলারোয়া আমলী আদালত-৪ এ উপস্থিত হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক মহিদুল হাসান মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাতক্ষীরা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন। ভাইস চেয়ারম্যান শাহাজাদা কলারোয়া পৌর সদরের তুলসীডাঙ্গা গ্রামের মৃত কাজী আশরাফ আলীর ছেলে। মামলার বিবরণে জানা যায়, ভুক্তভোগী তরিকুল ইসলাম কলারোয়া থানার সামনে দাউদ মটর নামে একটি মোটরসাইকেল শো-রুম খুলে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। তার কাছে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের নামে ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা আছাদুজ্জামান শাহাজাদা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। গত ২০২০ সালে কাজী শাহাজাদা বাদীর দোকান থেকে একটি হোন্ডা এফজেড (মুল্য ১লক্ষ ৬০ হাজার) মটরসাইকেল নিয়ে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। বাকি টাকা পরে দেয়ার অঙ্গীকার করলেও টাকা না দিয়ে তালবাহানা করতে থাকেন। এ ছাড়া গত ১০ মার্চ যুবলীগ নেতা ফেরদাউদ মোটরস্ এর শো-রুম থেকে আরো একটি হোন্ডা এফজেড (মূল্য ১লক্ষ ৬০ হাজার) মটরসাইকেল বাকিতে নিয়ে যায়। পরে টাকা চাইতে গেলে বিবাদী বাদীকে খুন জখমসহ বিভিন্ন হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করে। এ সময় বাদীর নিকট উল্টো ৩ লক্ষ টাকা পাবে এমন কথা বলে তাকে শাসাতে থাকে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে কাজী শাহাজাদা বাদীকে ফাঁদে ফেলার জন্য পায়তারা শুরু করে। একপর্যায়ে গত ২৮ এপ্রিল মিমাংসার কথা বলে বাদী তরিকুল ইসলামকে তার ডেরায় কৌশলে ডেকে নিয়ে মারপিট করে একাধিক সাদা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও দু’টি সাদা ব্যাংক চেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। বিষয়টি বাদী স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ তার স্বজনদের জানালে যুবলীগ নেতা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৭ মে তার ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে তরিকুলের বাড়িতে গিয়ে ৯০লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে জীবন নাশের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করতে থাকে। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শাহাজাদা ও তার বাহিনীর হাত থেকে তরিকুলকে উদ্ধার করে। এ বিষয়ে ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা কাজী আসাদুজ্জামান শাহজাদা বলেন, তরিকুল তার ব্যবসায়িক পার্টনার। মামলার বাদী তরিকুলের কাছে তিনি টাকা পাবেন। প্রমাণ স্বরূপ স্ট্যাম্প ও চেক আছে। উল্লেখ্য, কাজী শাহাজাদা জাল জালিয়াতির মাধ্যমে গোপীনাথপুরের কুন্ডু পরিবারের জমি দখল, চাঁদাবাজি ও অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি দু’টি সিআর ও একটি জিআর মামলায় কাজী আসাদুজ্জামান শাহাজাদার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে এবং রাতে কলারোয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সে সময় শাহাজাদার বাড়ি থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৪টি কাগজপত্রহীন মোটরসাইকল, কিছু নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই উদ্ধার হয়। এ ছাড়া এই শাহাজাদার বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে এতিমধ্যে ২০টি অভিযোগ জমা হয়েছে। এদিকে এই চাঁদাবাজি মামলা করায় মামলার বাদী তরিকুল ইসলাম সন্ত্রাসীদের অব্যহত হুমকিতে বাড়ীতে আসতে পারছেন না। তিনি তাদের হুমকিতে পলাতক জীবন যাপন করছেন। ইতোমধ্যে তার শো-রুমের মালামাল লুটপাট করা হয়েছে বলে তরিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা