• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

অপহরণের ৫৪ দিন পর স্কুলছাত্রী উদ্ধার, দুই অপহরণকারী গ্রেপ্তার

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২৩  

অপহরণের ৫৪ দিন পর অপহরণকারি নাজমুল শেখসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার ও অপহৃতা সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল ভোরে কক্সবাজার জেলা সদরের একটি ভাড়া বাসা থেকে এ গ্রেপ্তার ও উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃত নাজমুল শেখ (২১) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের হান্নান শেখের ও আকরাম ঢালী পিরোজপুর গ্রামের হাকিম ঢালীর ছেলে। উদ্ধারকৃত সপ্তম শ্রেণীর হিন্দু শিক্ষার্থী একই ইউনিয়নের ডুমুরপোতা গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে।
আশাশুনি উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের এক গৃহবধু জানান, তার নাতনী একই ইউনিয়নের ডুমুরপোতা গ্রামের দিনমুজুরের মেয়ে তার বাড়িতে থেকে খাজরা ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশুনা করতো। নানা রশিদ সরদারের বাড়িতে থাকা একই গ্রামের হান্নান শেখের ছেলে নাজমুল শেখ তার নাতনীকে স্কুলে ও প্রাইভেট পড়তে যাওয়া- আসার পথে উত্যক্ত করতো। তাকে কু’প্রস্তাব দিতো। বিষয়টি তার বাবা, মা ও নানাকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। একপর্যায়ে গত ২১ মার্চ সকাল সাতটার দিকে দেবব্রত সরদারের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় পিরোজপুর সার্বজনীন কালিমন্দিরের সামনে থেকে নাতনিকে জোরপূর্বক মটর সাইকেলে করে অপরহরণ করে নাজমুল শেখ, চেউটিয়া গ্রামের আরিফুল ইসলাম সরদারের ছেলে মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন। সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়।
একপর্যায়ে তিনি (দিদিমা) বাদি হয়ে গত ২৮ মার্চ অঅশাশুনি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ সালের সংশোধিত ২০০৩ এর ৭/৩০ ধারায় নাজমুল শেখ, বাবা হান্নান শেখ, মা মাজেদা খাতুন, মেহেদী হাসান, রশিদ সরদার ও আল্লাদি সরদারের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক নূর হোসেন ঢাকা মীরপুর-১ এ অভিযান চালিয়ে শেখ নাজমুল ও তার মা মাজেদাকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হন। আসামী নাজমুল পালিয়ে যায় কক্সবাজারে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মামলাটি বদলী হয়ে সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশে ন্যস্ত হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মহসিন আলীর উপর ন্যস্ত হয়। তিনি র‌্যাব এর সহযোগিতায় ভিকটিম উদ্ধার ও আসামী গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা অব্যহত রাখেন।
গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মহসিন আলী বুধবার বিকেল ৫টায় এ প্রতিবেদককে জানান, র‌্যাব এর সহযোগতিায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোপন খবরের ভিত্তিতে তিনি জানতে পারেন যে তারই গ্রামের হাকিম ঢালীর ছেলে আকরাম ঢালীর সহায়তায় নাজমুল কক্সবাজার সদরের একটি হোটেলে কাজ করছে। সে অনুযায়ি মঙ্গলবার ভোরে নাজমুলকে কক্সবাজার সদরের একটি ভাড়াবাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপহরণে সহযোগতিার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় আকরাম ঢালীকে। উদ্ধার করা হয় ভিকটিমকে। জিজ্ঞাসাবাদে নাজমুল শেখ জানিয়েছে যে, ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে সে ওই ভিকটিমকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করেছে। নামজুল, আকরাম ও ভিকটিমকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে সাতক্ষীরায় আনা হচ্ছে। এই মুহুর্তে তাদের বহনকারি গাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে অবস্থান করছে। বৃহষ্পতিবার ভোরে তারা সাতক্ষীরায় পৌঁছাবেন। ওইদিন আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হবে। ২২ ধারায় জবানবন্দির জন্য ভিকটিমকে আদালতে ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা