• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় পতিত জমিতে বিনামুগ-৮ রোপনে চাষীদের মুখে হাসি

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৮ মে ২০২৩  

বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত, তাই আবাদি জমির প্রায় ৭০ শতাংশ ধান চাষ করা হয়। এমতাবস্থায়, অবশিষ্ট স্বল্প জমিতে বাড়তি মানুষের মুখে পুষ্টিকর সুষম খাবার পৌঁছানো একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি মুগ ডাল শারীরিক ও মানসিক বিকাশে আমিষ, আয়রন, ফাইবার, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ভাল উৎস হিসেবে কাজ করে।

তাছাড়া মুগডাল বায়ুমন্ডল থেকে নাইট্রোজেন নিয়ে নডিউল তৈরী করে এবং গাছের অবশিষ্টাংশ জমিতে মিশিয়ে দিলে জৈব রাসায়নিক সার তৈরী করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিনা) কর্তৃক উদ্ভাবিত বিনামুগ-৮ উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প-জীবনকাল সম্পন্ন হওয়ায় আমন-সরিষা-মুগ-আউশ শস্যবিন্যাসে সরিষা চাষের পরে এবং আউশ ধান চাষের পূর্বেই কৃষকেরা বাড়তি ফসল হিসেবে চাষ করতে পারে। তাছাড়া বিনামুগ-৮ এর প্রায় ৮০% পড একসাথে পাকে এবং হলুদ মোজাইক ভাইরাস সহনশীল। তাই কীটনাশক কম লাগে, ফলন খুব ভালো হয়।

বিনা উপকেন্দ্র, সাতক্ষীরা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার ছনকা গ্রামে কৃষকদের মাঝে প্রায় ১২০ কেজি বিনামুগ-৮ এর বীজ বিতরণ করা হয়েছিল এবং ফলন পেয়ে কৃষক খুশি। এই অঞ্চলের কৃষকদের সফলতা দেখে, অনেকেই বিনামুগ-৮ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

বিনামুগ-৮ এর চাষী মোস্তাফজিুর রহমান জানান, আগে তার জমি এই সময়ে পতিত থাকতো বিনা উপকেন্দ্র, সাতক্ষীরার মাধ্যমে তিনি বিনামুগ-৮ এর চাষ শুরু করেন, জাতটিতে রোগ বালাই এর আক্রমণ কম এবং ফলন অনেক বেশী হবার ফলে সে আর্থিক ভাবে অনেক লাভবান হয়েছেন। তার সাফল্যে আশেপাশের জমির কৃষকেরা তাদের পতিত জমিতে বিনামুগ-৮ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

বিনামুগ-৮ এর চাষি বিষ্ণু দেবনাথ জানান, বিনা উপকেন্দ্র সাতক্ষীরা থেকে বিনামূল্যে বীজ নিয়ে বিনামুগ-৮ চাষ করি। আমার ৩৩ শতক জমিতে প্রায় ২৭০ কেজি মুগডাল হয়েছে। কম খরচে মুগচাষে লাভবান হয়েছি। বিনা উপকেন্দ্র সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মোঃ বাবুল আকতার বলেন, বিনামুগ-৮ জাতটি স্বল্প জীবনকাল, উচ্চ ফলনশীল ও হলুদ মোজাইক ভাইরাস সহনশীল হওয়ায় ফলন ভাল হয়, কীটনাশক কম লাগে এবং চাষাবাদ খরচ অনেক কম। তাই কৃষক ভাইয়েরা এই জাত চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে। বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, কোন জমি পতিত রাখা যাবে না।

এবছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে আরো বেশী বেশী মুগ ডাল রোপন করতে হবে। রবিবার (৭ মে) বিকেলে সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার ছনকা গ্রামে শস্য আহরণ উপলক্ষ্যে ডালক্ষেতের পাশেই অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা)
মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। বিনা উপকেন্দ্র, সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মোঃ বাবুল আকতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিনার ময়মনসিংহ প্রধান কার্যালয়ের উদ্ভিদ

প্রজনন বিভাগের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান গবেষক ড. শামসুন্নাহার বেগম, কর্মসূচি কর্মসূচি-পরিচালক ড. মাহবুবা কানিজ হাসনা, সাতক্ষীরার কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ সাইফুল ইসলাম, সদর উপজেলার উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মনির হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিনা উপকেন্দ্র, সাতক্ষীরার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিলন কবীর।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা