• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

শীত বাড়ায় সাতক্ষীরায় শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২২  

শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরায় দেখা দিয়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। বিশেষ করে শিশুরা কোল্ড ডায়রিয়া, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হচ্ছে।  
জেলায় শীতজনিত রোগে আক্রান্তের ভর্তির হার বাড়ছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে রোগী বেড়েছে ৬/৭ গুণ। শিশু বিশেষজ্ঞরা জানান, ঠান্ডা থেকে শিশুদের সুরক্ষা দিলে সুরক্ষিত থাকবে তারা। ঠান্ডা লাগলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বয়স্কদের ক্ষেত্রেও একই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসারা।
সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন এক থেকে দেড়শত শিশু আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিতে আসছে। ভর্তি রয়েছে ৪৮ জন শিশু। এ ছাড়া সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ৪০ জন। আর সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে শতাধিক শিশু। এ ছাড়া আউটডোরে এ দুই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রতিদিন কমপক্ষে দুই শতাধিক শিশু। গত সপ্তাহে এ সংখ্যা ছিল অর্ধেকেরও কম। আর তার আগের সপ্তাহে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালে শিশু রোগী ভর্তি ছিল ১১ জন। সদর হাসপাতালে এ সংখ্যা ছিল ১০ জন। 
সামেক হাসপাতালে ভর্তি আছে মাত্র ১৩ জন শিশু। শিশুরা বর্তমানে সাধারণত জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, সাতক্ষীরায় শীত শুরু হয়েছে সপ্তাহ দুয়েক। দিনের বেলা কিছুটা গরম থাকলেও রাতে বেশ শীত পড়ছে। আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। 
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তাই তারা সহজে জীবাণুতে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া ধুলাবালির আধিক্যের কারণেও তারা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে। 
সদর উপজেলার খেজুরডাঙ্গা এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলের বয়স তিন বছর। বেশ কয়েকদিন ধরে তার কাশি ও শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তাই তাকে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেছি।’ 
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সুমি আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়ের বয়স আড়াই বছর। গত বুধবার থেকে মেয়েটির জ্বর। প্রথমদিকে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করায়। আজকের সকালে তার খিচুনি হচ্ছিল। আমি আর দেরি না করে তাকে সামেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেছি। চিকিৎসকরা বলছেন, সে নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়েছে।’ 
সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলের বয়স চার বছর। কয়েকদিন তার হালকা শ্বাসকষ্ট ছিল। গত রাত থেকে পাতলা পায়খানা হচ্ছে। তাই তাকে চিকিৎসার জন্য শিশু হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ডাক্তার দেখিয়েছি বেশ কিছু পরামশ দিয়েছেন।’
সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক মো. আবুল বাশার বলেন, শিশুদের সর্দি-জ্বর এমনিতে কয়েক দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে অবস্থা গুরুতর হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। এ ছাড়া শিশুর যাতে ঠান্ডা না লাগে, সেই বিষয়টি খেয়াল করতে হবে। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন এই শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আল আহমেদ আল মাসুদ বলেন, হাসপাতালে শিশুদের জন্য ৩০টি বেড রয়েছে। পরিপূর্ণ থাকছে বেডগুলো। সম্প্রতি অনেক রোগীকে ফ্লোর করতে হচ্ছে। এ ছাড়া আউটডোরে তো ব্যাপক চাপ। 
তিনি আরও বলেন, শীতকালে ধুলাবালি বাড়ায় শিশুরা সহজেই শ্বাসতন্ত্রে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু শিশুরা নয়, বয়স্ক ব্যক্তিরাও অধিক হারে আক্রান্ত হচ্ছে। পরিবেশ দূষণরোধে যেখানে সেখানে কফ ও থু থু না ফেলার পরামর্শ দেন এ চিকিৎসা কর্মকর্তা। 

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা