• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় কুকুরের কামড়ে দু`দিনে ৩৭ জন আহত

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২  

সাতক্ষীরায় পাগলা কুকুরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দু'দিনে পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন অন্তত ৩৭জন ব্যক্তি। এর মধ্যে ৫ সেপ্টেম্বর ১৯জন এবং ৬ সেপ্টেম্বর ১৮জন ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন বলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়।
এদিকে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে পাটকেলঘাটার জুগিপুকুরিয়া গ্রামের আমজেদ মোড়লের ছেলে আব্দুল্লাহ(৮) এবং সদর উপজেলার মাগুরা গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসি ইকবাল হোসেনের ছেলে নাজমুস সাকিব(৪)কে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এসময় আহত শিশুদ্বয়ের স্বজনরা জানান,  শিশু শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে পাটকেলঘাটায় প্রয়াত ইউপি চেয়ারম্যান বদরুল ইসলামের বাড়ির সামনে পৌঁছালে পিছন থেকে একটি কুকুর আব্দুল্লাহর ডান পায়ে একাধিক স্থানে কামড়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় স্থানীয়রা আহত অবস্থায় শিশু আব্দুল্লাহকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। তাৎক্ষণিক তার স্বজনরা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক টিকা কেন্দ্রে নিয়ে আসেন।

এদিকে,  বেলা ১২টার দিকে কুকুরের কামড়ে আহত হয় সদর উপজেলার মাগুরা গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসি ইকবাল হোসেনের ছেলে  শিশু নাজমুস সাকিব(৪)। নাজমুস সাকিব বাড়ির পাশে বিকল হয়ে পড়ে থাকা একটি স্কেভেটরের পাশে অন্য শিশুদের সাথে খেলা করছিলো।  হঠাৎ একটি কুকুর এসে নাজমুস সাকিবের বামপায়ে ও পিঠে কামড়ে দেয়। এ সময় সে চিৎকার দিতে দিতে বাড়িতে ফিরে আসে। তাৎক্ষনিক তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক টিকা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে জলাতাংক রোগ প্রতিরোধক টিকা প্রদান করা হয়।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক টিকা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন যাবত সাতক্ষীরা জেলার সাতটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুকুরে কামড়ানোর ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।  প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কুকুরের কামড়ে আহত রোগী আসছে সদর হাসপাতালে। কুকুরে কামড়ানো আহদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু এবং ৬০/৬৫ বছরের বৃদ্ধ। তবে সোম ও মঙ্গলবার কুকুরে কামড়ানো আহতদের সংখ্যা কম থাকে। বৃহস্পতিবার ও শনিবার আহতদের সংখ্যা বেশি পাওয়া যাচ্ছে।  
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে জলাতাংক রোগ প্রতিরোধক টিকা কেন্দ্রের সিনিয়র এক সেবিকা বলেন, সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক টিকা কেন্দ্র মাত্র একটি। সেটি সাতক্ষীরার সদর হাসপাতাল কেন্দ্র।  জেলার দূর-দুরান্ত ও দূর্গম পল্লী এলাকার মানুষদের কুকুরে কামড়ালে তাদেরকে সদর হাসপাতালে কষ্ট করে আসতে হয়। জেলার উপজেলা পর্যায়ে  জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক টিকা প্রদান সেবা চালু করলে সাধারণ মানুষের কষ্ট অনেক কমে যাবে।  তিনি আরও জানান, ৫ সেপ্টেম্বর জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কুকুরের কামড়ে আহত ১৯ জন রোগী তাদের কাছে সেবা নিতে আসে। ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কুকুরে কামড়ানো ১৮জন আহত রোগী এসেছে। কুকুরে কামড়ানো আহতদের জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক টিকা চার বারে ৮টি টিকা প্রদান করা হয়।  আহতের প্রথম দিন প্রথম টিকা। তিন দিন পরে দ্বিতীয় টিকা।  সাত দিন পরে তৃতীয় টিকা এবং ২৮ দিন পরে চতুর্থ বা শেষ টিকা প্রদান করা হয়।  

তিনি জানান, কুকুর, বিড়াল, শিয়াল-এ সমস্ত প্রাণীতে মানুষের কামড়ালে প্রাথমিক পর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে ক্ষত স্থানে পানি এবং বল সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুতে হবে। এবং আহতদের জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক টিকা কেন্দ্রে আনতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা নিতে হবে।
সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন শাফায়াত বলেন, বছরের এ সময় পাগলা কুকুরের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। কুকুর নিরীহ প্রাণি। কুকুরের আক্রমণ থেকে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। বেওয়ারিশ পাগলা কুকুরের আক্রমনে অনেকেই আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসছেন। তাদেরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা দেওয়া হচ্ছে।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা