• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় গর্ভপাতে মা ও শিশু মৃত্যু, ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২২  

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সনদ বিহীন প্রাইভেট হাসপাতলে অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে গৃহবধূ ও তার শিশু কন্যার মৃত্যুর ঘটনায় পল্লী প্রাইভেট হাসপাতালে পরিচালক শেখ আহছান হাবিব ও হারুন-অর-রশিদসহ ১০ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্বামী জাহাঙ্গীর শিকারী বাদি হয়ে রোববার (১৫ মে) শ্যামনগর থানায় এই মামলা দায়ের করেন।

অদক্ষ্য নার্স ও হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে গর্ভপাত করাতে গিয়ে প্রসূতি সাবিনা খাতুন (৩২) ও তার সাত মাসের একটি শিশু কন্যার অকাল মৃত্যু হয়। পরে ক্লিনিক মালিক শেখ আহছান হাবিব ও হারুন বিভিন্ন ধরনের প্রলোভনে দেখিয়ে নিহত গৃহবধূর মাতা হালিমা বেগম ও তার আত্মীয় স্বজনদের ম্যানেজ করে অতি গোপনীয় ভাবে তাদরে দাফন সম্পন্ন করেন। পরে শ্যামনগর থানা পুলিশ জানতে পেরে কবর থেকে মা ও শিশু কন্যার লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়না তদন্ত শেষে শনিবার বিকালে মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

খোঁজনিয়ে জানা যায়, যুবলীগ নেতা পরিচয়ে শ্যামনগরের হায়বাতপুর গ্রামের শেখ মেহের আলীর ছেলে শেখ আহসান হাবিব ও মাজাট গ্রামের আনসার আলীর ছেলে হারুন-অর-রশিদ দীর্ঘদিন সনদবিহীন অবৈধভাবে পল্লী প্রাইভেট হাসপাতাল নামের একটি হাসপাতাল পরিচালনা করে আসছিলেন। শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের পার্শ্বেখালি গ্রামের জাহাঙ্গীর শিকারীর স্ত্রী সাবিনা খাতুন (২৭) একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে ১৩ মে শুক্রবার বেলা ১ টার দিকে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়।

নিহত সাবিনার মা হালিমা বেগম জানান, দুপুর ২ টার দিকে একটি অপরিচ্ছন্ন পরিত্যাক্ত রুমের ভিতরে আমার মেয়ে সাবিনাকে নিয়ে যায় অবৈধ গর্ভপাতের জন্য। গর্ভপাত করানোর পর পরই প্রচুর রক্তক্ষরন শুরু হয় সাবিনার। অতিরিক্ত রক্তক্ষরন হওয়ায় আমার মেয়ে ও তার ৭ মাসের শিশু কন্যা সাথে সাথে মারা যায়। এঘটনায় নিহত সাবিনার স্বামী জাহাঙ্গীর শিকারী বাদি হয়ে রোববার শ্যামনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নাম্বার ২৮।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, মাছ ব্যবসার কাজে তিনি ঢাকার সাভারে থাকেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিলো। দাম্পত্ব জীবনে তাদের ইয়াছিন নামে এক ছেলে সন্তান আছে। তার স্ত্রী ৭ মাসের অন্তঃস্বত্ত¡া ছিল। বাড়ি না থাকার সুযোগে শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালক ভুল বুঝিয়ে তার স্ত্রীকে জোর করে ক্লিনিকে নিয়ে অবৈধভাবে গর্ভপাত করায়। তিনি মামলার আসামীদেও গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।

মামলা হওয়ার আগে থেকেই ক্লিনিক মালিক আহসান হাবিব ও হারুন-অর-রশিদ গা ঢাকা দিয়েছে। যুবলীগ নেতা পরিচয়দানকারী অবৈধ ক্লিনিক ব্যবসায়ী আহসান ও হারুনকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী।

শামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বলেন, অবৈধ গর্ভপাতের ঘটনায় ক্লিনিকের মালিক সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি ভ্রæন হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা