• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

দেবহাটা হানাদার মুক্ত দিবস আজ

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৬ ডিসেম্বর ২০২১  

আজ ৬ ডিসেম্বর, সাতক্ষীরার মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগাঁথা ঐতিহাসিক দেবহাটা হানাদার মুক্ত দিবস। একাত্তরের আগুনঝরা এই দিনে মুক্তিকামী বাংলার বীর সেনানীদের কাছে পরাজিত হয়ে দেবহাটা ছেড়ে চলে যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। সাথে সাথে হানাদার মুক্ত হয় সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা। বিজয়ের পতাকা হাতে উল্লাসে ফেটে পড়ে মুক্তিকামী সাধারণ মানুষ। দেবহাটার আকাশে ওড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মুক্তিকামী মানুষের উল্লাসে মুখরিত হয় পাকবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞে ক্ষত-বিক্ষত দেবহাটার সর্বস্তরের মানুষ খুঁজে পেয়েছিল দীর্ঘদিনের যুদ্ধ জয়ের আনন্দ।

সূত্রমতে, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সমগ্র দেবহাটা ছিল ৯নং সেক্টরের অর্ন্তভুক্ত। বাংলাদেশের ১১টি সেক্টরের মধ্যে ৯নং সেক্টরটি ছিল সর্ববৃহৎ। ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাস্টারের উদ্যোগেই ভারতের টাকীতে গড়ে তোলা হয় ৯নং সেক্টর। সেজন্য তাকে ৯নং সেক্টরের প্রতিষ্ঠাতা ও সাব সেক্টর কমান্ডারের খেতাব দেয়া হয়। সমগ্র দেবহাটা থানা ৯নং সেক্টরের অধীনে ছিল। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর জলিল।

শাহজাহান মাস্টারের নেতৃত্বেই এই অঞ্চলের যুবকেরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি দেশ মাতৃকার টানে এলাকার যুবকদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রেরণা যুগিয়েছিলেন। তখন দেবহাটা এলাকার খানজিয়া ক্যাম্প, দেবহাটা ক্যাম্প, টাউনশ্রীপুর ক্যাম্প, সখিপুর ক্যাম্প, পারুলিয়া ক্যাম্প, কুলিয়া বাজার ও পুষ্পকাটি ইটেরভাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাক সেনারা ঘাঁটি গড়ে তোলে। দেবহাটার টাউনশ্রীপুর ফুটবল মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাক সেনাদের যুদ্ধ হয়। প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপী যুদ্ধে পাকসেনারা পরাস্ত হয়। এই যুদ্ধে বহু পাক সেনা নিহত হয়। এক পর্যায়ে টাউনশ্রীপুরের সেনা ঘাটির পতন হয়। তবে পাক সেনারা দেবহাটা ছেড়ে যাওয়ার সময় শাহজাহান মাস্টারের বাড়ি আগুনে জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া ভাতশালাসহ বিভিন্ন যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাস্টার। ভাতশালা যুদ্ধের শেষের গুলিবিদ্ধ নিহত হয় মুক্তিযোদ্ধা গোলজার।

অক্টোবর মাসে পাকিস্থানী সেনারা খাঁনজিয়া ক্যাম্প ছেড়ে পলায়ণ করে। যাওয়ার সময় ওই এলাকায় বেশ কিছু এ পি মাইন পুতে রেখে যায়। যে মাইন অপসারণ করতে যেয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব শহীদ হন। পরে পারুলিয়া, সখিপুর ও কুলিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধে পাক সেনারা পরাস্ত হয়। তারা চলে যাওয়ার সময় বহু মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং পারুলিয়া ব্রীজ ধ্বংস করে দেয়। এভাবে ৬ ডিসেম্বর দেবহাটা উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়।

এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই দিনটি স্মরণে দেবহাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে পৃথক কর্মসুচি গ্রহণ করা হয়েছে।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা