• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় করোনা নমুনা পরীক্ষায় অনীহা

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০২১  

সাতক্ষীরায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনা সংক্রমণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহর থেকে গ্রামে নিন্ম বৃত্ত থেকে উচ্চ বৃত্ত সমাজের সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ করোনায় সংক্রামিত হচ্ছে। সমাজের সকল স্তরের মানুষের মাঝে করোনা নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে নির্লিপ্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যদিকে চিকিৎসকেরা বলছে করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার আওতায় আসলে করোনার মৃত্যুও ঝুঁকি কম থাকে এবং দ্রæত শারীরিক সক্ষমতা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

এ বিষয়ে তিন দিনের জ্বর ও মাথা ব্যথা নিয়ে ফামের্সীতে ওষুধ কিনতে আসা আমতলা এলাকার রাজমিস্ত্রি মিজানুর রহমান (৪৫) বলেন, বর্ষার সময় এ রকম একটু জ্বর হয় নাপা এক্সট্রা খেলে ঠিক হয়ে যাবে। করোনা পরীক্ষা করলে যদি করোনা ধরা পড়ে তাহলে তো অনেক খরচ।

ফামের্সীতে ওষুধ নিতে আসা শহরতলির গড়ের কান্দার প্লাস্টিক ব্যাবসায়ি আব্দুর সামাদ (২৯) বলেন,চার দিন জ্বর স্বাদ ও গন্ধহীন অবস্থায় আছি কোন কিছু খেতে পারছি না, শরীর দুর্বল। প্যারাসিটামল খাচ্ছি দেখাযাক কি হয়। করোনা নমুনা পরীক্ষা করছি না কারণ করোনা পজেটিভ হলে সদর হাসপাতালে মেডিকেলে জায়গা নাই। ক্লিনিকে গেলে বহু টাকা লাগবে আবার বাড়িতে আইসোলেশনে থাকলে অনেক টাকার ওষুধ খেতে হবে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ওষুধের দোকানি জানান, আগে আমরা নাপা এক্সট্রা, এইস প্লাস ও প্যারাসিটামল নিতে আসলে আমরা দিতাম কিন্তু বর্তমানে মহামারি করোনার সময়ে কাউকে আর ঐ ওষুধ গুলো প্রেসক্রিপশন ছাড়া দেয় না। কেউ নিতে আসলে বলি আপনারা অবহেলা করবেন না ডাক্তারের কাছে যান ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসেন পরে ওষুধ নেন। অল্প লাভের জন্য আমরা চাই না কারোর ক্ষতি হোক।

এ বিষয়ে গ্রাম ডা: আবুবকর সিদ্দিক জানান, ইটাগাছা বাঙালের মোড় এ অঞ্চলে ৫০ থেকে ৬০ জন করোনা সন্দেহ বা করোনা লক্ষণের রোগী আমাকে দেখতে হচ্ছে। করোনা নমুনা পরীক্ষা করতে চাচ্ছে না যদি করোনা পজেটিভ আসে তাহলে সিটি স্কান সহ অন্যান্য ওষুধ ও ইনজেকশনে অনেক খরচ হবে এ চিন্তায়। আবার অনেকে পরীক্ষা করাছেনা তাদের যদি পজেটিভ হয় তাহলে তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কেউ মিসতে চাইবেনা তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হবে এ চিন্তায়।
বাংলাদেশ গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির জেলার সভাপতি গ্রাম ডা: মাহাবুবুর রহমান জানান, বহু রোগী আছে যারা করোনা নমুনা দিতে যেয়ে করোনা সংক্রমিত হবে এ আশঙ্কায় করোনা পরীক্ষা করাছে না। মুন্সিপাড়ার একটি ইয়াং ছেলে যাকে আজ তিন দিন যাবৎ বলছি করোনা পরীক্ষা করাতে কিন্তু সে পরীক্ষা করাবে না। আমরা কি করতে পারি। আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে বুঝাতে।
আদর মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র সাতক্ষীরা’র পরিচালক আকতার হোসেন জানান, সাতক্ষীরা সিমান্তবর্তী জেলা এখানের অনেক মানুষ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আসা যাওয়া করে এ কারণে সংক্রমণ অত্যন্ত বেশি। করোনা এখন শহর থেকে গ্রামে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে, গ্রামের মানুষ সচেতন না। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ এলাকা ভিত্তিক করোনা নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করতো তাহলে সকলে করোনা পরীক্ষায় আগ্রহী হত এবং সুফল পাওয়া যেত।
সাতক্ষীরা পৌর ৬নং ওয়ার্ডেও কাউন্সিলার মারুফ আহম্মেদ জানান, আমার নির্বাচনি এলাকায় ব্র্যাকের আরমান প্রকল্পের সাথে করোনা রোগীর উপর কাজ করছি। পৌরসভা থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ট্যাক্সেও কাগজের সাথে গ্রাহককে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও মাস্ক পৌছে দেওয়া হবে। এলাকার করোনা লক্ষণের রোগী খরচের চিন্তায় চিকিৎসা করতে সদর হাসপাতাল মেডিকেলে যেতে চাচ্ছে না। করোনা মহামারির এ সময়ে সমাজের সকলকে বিশেষকরে বৃত্তশালী সকলকে মানুষের পাশে^ দাঁড়াতে হবে।
গ্রাম পর্যায়ে করোনা নমুনা সংগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না জবাবে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা: হুসাইন শাফায়াত দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরাকে জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে। আলাদাভাবে বুথ স্থাপনের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পিপিএ অন্যান্য সরঞ্জাম গøাসের ঘর যার সবটার সংকট আছে। আমাদের সকলকে কষ্ট হলেও সরকারি নির্দেশিত লকডাইনের নিয়ম মেনে চলতে হবে।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা