• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

অভুক্ত বানরের বোবা কান্না

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২০  

চারশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঢাকার ধামরাইয়ে মানুষের সঙ্গে লোকালয়ে বাস করছে বানরের পাল। মানুষের দেওয়া খাবার, উচ্ছিষ্ট খেয়ে বেঁচে থাকে প্রাণীগুলো। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে দোকানপাট প্রায় বন্ধ। বাইরে জনসমাগম কম। যে কারণে অভুক্ত দিন কাটাচ্ছে বানরের দল।

কিছুদিন আগেও ধামরাই বাজার ছিল ক্রেতা-বিক্রেতায় ঠাসা। অনেকেই বানর দেখলেই কলা-বিস্কুট এগিয়ে দিতো। সেগুলো নিয়ে দূরে সরে যেত বানরের দল। তারপর নিরাপদে বসে খেত। এখন বাজার বলতে গেলে লোকশূন্য। ফলে কেউ আর আগের মতো ওদের এটা-ওটা দেয় না। শূন্য বাজারে লোক দেখলেই খাবারের আশায় ক্ষুধার্ত বানরগুলো নির্বাক চোখে তাকিয়ে থাকে।  যেন কত কথা তারা বলতে চাইছে। কিন্তু চোখের সেই ভাষা পড়ার সময় করোনায় বিপর্যস্ত মানুষের এখন নেই।

স্থানীয়রা জানান, ধামরাই বাজার এলাকায় এমনিতেই কমে আসছে বানরের সংখ্যা। উপজেলাজুড়ে দোকানের ছাদ, পরিত্যক্ত স্থান বা গাছে আস্তানা বানিয়ে বানর বাস করে। বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে এরা পরিচিত। এমনিতে নিরামিশভোজী হলেও এদের খাবারে বৈচিত্র রয়েছে। এলাকাবাসীর সঙ্গে তাদের রয়েছে দীর্ঘদিনের সখ্য। এ কারণে স্থানীয় দোকানিরাও বানরদের খাবার দিতো। তবে করোনাভাইরাসের প্রকোপে তাদের চাহিদা অনুযায়ী খাবার তারা পাচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রউফ বলেন, প্রায় ১ মাস ধরে খাবারের দোকান বন্ধ। মানুষও খুব বেশি বাড়ির বাইরে বের হয় না। ফলে বানরগুলো বিপদে পড়ে গেছে। দেখে মায়া হয়।

রউফ জানালেন, তিনি নিজেই কিছুদিন আগে সামান্য কলা রুটি কিনে দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিদিন তার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। কী করবেন তিনি বুঝতে পারছেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সোনিয়া ইশরাত ইভা বলেন, স্থানীয় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রকৃতি থেকে খাদ্য সংগ্রহ করার সুযোগ নেই। এখন মানুষও যদি খাবার দেওয়া বন্ধ করে দেয়, তাহলে ওরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠবে এবং বিপন্ন হয়ে পড়বে।

ধামরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. সাইদুর রহমান বলেন, এ মুহূর্তে বানরের খাবার দেওয়ার মতো বরাদ্দ আমাদের নেই। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ধামরাই পৌরসভার মেয়র গোলাম কবির মোল্লার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, আগে স্থানীয় বেকারিগুলো থেকে বানরের খাবার সংস্থান করা হতো। এখন অনেক বেকারিই বন্ধ। কিন্তু তাই বলে প্রাণীগুলোকে তো আর অভুক্ত রাখা যাবে না। আমরা খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা