• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

আজ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে ২০ লাখ শিক্ষার্থী

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৩  

নয়টি সাধারণ এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে গতবারের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৫০ হাজার। দেশে ও দেশের বাইরে ৩ হাজার ৮১৮ কেন্দ্রে একযোগে শুরু হয়েছে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা, যাতে অংশ নিচ্ছে ১১টি শিক্ষাবোর্ডের ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন শিক্ষার্থী।
রোববার সকাল ১০টায় নয় বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র; এসএসসি ভোকেশনালে বাংলা-২ এবং মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে কুরআন মজিদ ও তাজভিদ বিষয়ের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগেই হলে ঢুকতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।

নয়টি সাধারণ এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে গতবারের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৫০ হাজার ২৯৫ জন। মহামারীর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হত ফেব্রুয়ারিতে। মাঝে কয়েক বছর সেই নিয়মে ছেদ পড়ে। ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এপ্রিলে নেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল সরকার।

এই পরীক্ষা ঘিরে মঙ্গলবার ‘জাতীয় মনিটরিং ও আইন শৃঙ্খলা’ সংক্রান্ত কমিটির সভায় একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার তুলে ধরা হয়। এতে জানানো হয়, এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টায় এবং শেষ হবে দুপুর ১টায়। পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী এর পরে কেন্দ্রে উপস্থিত হলে, তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।

পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী কোন সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট নিয়ম অনুযায়ী খুলবেন। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ (পরীক্ষার্থী, কক্ষ প্রত্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শ্ন টিম, বোর্ডের পরিদর্শন টিম, জেলা ও উপজেলা পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য) ব্যতীত অন্য কেউই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।

বরাবরের মতো কেন্দ্র সচিব ছাড়া কেন্দ্রে অন্য কারও মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি নেই। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। কেন্দ্র সচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবে না।

প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন ট্যাগ অফিসার দেওয়া হবে। ট্যাগ অফিসার ট্রেজারি, থানা হেফাজত থেকে কেন্দ্র সচিবসহ প্রশ্নপত্র বের করে পুলিশ প্রহরায় সকল সেটের প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। ট্রেজারি-থানা থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরাও কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাচযুক্ত মাইক্রোবাস বা এমন কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।

শিক্ষা বোর্ডসমূহের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো অনলাইনে সার্বক্ষণিকভাবে তথ্য আদান প্রদান করবে। পরীক্ষা উপলক্ষে ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। এর বাইরে প্রশ্নফাঁস ও প্রশ্নফাঁসের গুজব রোধে ফেইসবুক, মোবাইল ব্যাংকিং ও বিজিপ্রেসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর বিটিআরসির ও গোয়েন্দা নজরদারি থাকছে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার।

পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ বলেছে, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে পরীক্ষার্থী ছাড়া জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্তরা এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য বরাবরের মত শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় বসার সুযোগ এবারও রয়েছে। এছাড়া, অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম এবং সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত পরীক্ষার্থীসহ শ্রবণ থেকে শুরু করে সব প্রতিবন্ধী অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে পরীক্ষায়।

·২০২৩ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে এ পরীক্ষা হচ্ছে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে।

·পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হবে।

·সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে এর মধ্যে শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৪ মে থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে মে মাসের ৩০ তারিখে।

·মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ৩০ এপ্রিল থেকে ২৫ মে। আর ২৭ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ৩ জুন শেষ হবে।

·কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে তত্ত্বীয় পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত চলবে। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু ২৫ মে, শেষ হবে জুন মাসের ৪ তারিখে।

এ বছরের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার বিষয়ে জানাতে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি জানান, এবার ছাত্রদের মধ্যে ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ জন এবং ছাত্রীদের মধ্যে সংখ্যা ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ছাত্রের তুলনায় ২ হাজার ৭৬৯ জন ছাত্রী বেশি অংশ নিচ্ছে।

গত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবছর মোট পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৫০ হাজার ২৯৫ জন, যেখানে ছাত্রীর সংখ্যাই বেড়েছে ৩৮ হাজার ৬০৯ জন।

কোন বিভাগে কত পরীক্ষার্থী

নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ২৭৫ জন পরীক্ষার্থী। ছাত্র ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭০ জন এবং ছাত্রী ৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪০৫ জন। অর্থাৎ সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে ছাত্রদের তুলনায় ৮৯ হাজার ৫৩৫ জন ছাত্রী বেশি অংশ নিচ্ছে। দাখিলে বা মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৩ জন এবং ছাত্রী ১ লাখ ৫১ হাজার ১২৮ জন। এখানেও ছাত্রীরা এগিয়ে ৭ হাজার ১৩৫ জন।

এই দুই বোর্ডের হিসাব মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষায় অগ্রগতির জানান দিলেও উল্টো চিত্র কারিগরি শিক্ষায়। এসএসসি/দাখিলে (ভোকেশনাল) মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৬৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯৭ হাজার ৩৩৪ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে, সেখানে ছাত্রী সংখ্যা মাত্র ৩০ হাজার ৪৩৩ জন।নয়টি শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৩৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এরপর রাজশাহী বোর্ডে ৯১ হাজার ৫৫৭ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৮৯ হাজার ৯১৯ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৫৮ হাজার ৯৮৭ জন, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৪২ হাজার ২৪ জন, যশোর বোর্ডে ৩৯ হাজার ৩৮৫ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৩৪ হাজার ২০ জন, বরিশাল বোর্ডে ২৪ হাজার ১৫৬ জন এবং সিলেট বোর্ডে সবচেয়ে কম ২৩ হাজার ১৯২ জন শিক্ষার্থী।

এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ৩৭ হাজার ৩২০ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে। নয়টি শিক্ষাবোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মোট ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫৭৪ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ৮ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৫ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ২ লাখ ৮০ হাজার ৮১৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। মোট ৩ হাজার ৮১০ কেন্দ্রে এবারের পরীক্ষা হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি। এবার ২৯ হাজার ৭৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বসছে। গতবারের তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০৭টি।

এবছর দেশের বাইরে আটটি কেন্দ্র হচ্ছে এসএসসি ও সমানের পরীক্ষা। এসব কেন্দ্রের মধ্যে জেদ্দায় পরীক্ষায় অংশ নেবে ৮৯ জন, রিয়াদে ৫১ জন, ত্রিপলিতে ৪ জন, দোহায় ৭৭ জন, আবুধাবীতে ৪১ জন, দুবাইতে ২৭ জন, বাহরাইনে ৬৫ জন, সাহামে (ওমান) ২০ জন।

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা