• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের সাতক্ষীরা

নতুন আশায় টিম বাংলাদেশ

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২০  

৩১তম আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড (আইবিও) চ্যালেঞ্জ-২০২০ শুরু হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে দেশে থেকেই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে জাপানের নাগাসাকিতে অনুষ্ঠিত দু'দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন 'টিম বাংলাদেশ'-এর চার শিক্ষার্থী। তারা হলেন- এসএফএক্স গ্রিনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের তাসনিম বিনতে জুলফিকার, দি আগা খান স্কুলের রাফসান রহমান রায়ান, সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষার্থী আবরার জামিল ও রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের রাদ শারার।

প্রথম তিনজন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিইসি ভবনের একটি ল্যাবে এবং কোয়ারেন্টাইনে থাকায় রাজশাহী থেকে শেষের জন অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছেন। কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই প্রথম দিন অ্যানিমেল ফিজিওলজি ও বায়ো-ইনফরমেটিক্স বিষয়ে তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের আসরে বিশ্বের ৯৫টি দেশের ৩৯০ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। গত বছর অনুষ্ঠিত ৩০তম আইবিওতে বাংলাদেশ তিনটি ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেছিল। এবারও সূর্যোদয়ের দেশ থেকে সাফল্যের আশায় বুক বেঁধেছে টিম বাংলাদেশ।
গতকাল দুপুরে প্রথম দিনের অলিম্পিয়াড পরীক্ষা পরিদর্শন করেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের (বিডিবিও) সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া এবং সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি। পরীক্ষা শেষে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথাও বলেন।
অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, আন্তর্জাতিক একটি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছে, এটা খুবই আনন্দের বিষয়। ভবিষ্যতে আমাদের শিক্ষার্থীরা আরও বেশি এসব আয়োজনে সংযুক্ত হবে। করোনার প্রভাবে যেন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো ব্যাহত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। করোনা স্থায়ী হচ্ছে, তাই করোনার সঙ্গেই আমাদের চলতে হবে; শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। বিকল্প পন্থায় হলেও জ্ঞান অর্জন থেকে দূরে থাকা যাবে না। করোনার পরে অন্য কোনো মহামারি আসবে না- তা নিশ্চিত নয়, তাই যে কোনো পরিস্থিতিতে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। প্রযুক্তি এবং সময়ের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মেনে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আইবিওতে অংশ নিতে পারছি, এটা আমাদের জন্য গর্বের। এই কঠিন সময়েও আয়োজক, জুরি, প্রশিক্ষক, বুয়েট কর্তৃপক্ষসহ যারা আয়োজনটি সফলভাবে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করেছেন, প্রত্যেককেই আন্তরিক ধন্যবাদ। আগামী বছর একই অবস্থা বিরাজমান থাকলেও আয়োজন চালিয়ে নিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যে কোনো পরিস্থিতিতে আমরা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় কাজ করে যেতে চাই। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যেন জীববিজ্ঞানে উৎসাহী হয়, বিজ্ঞানে এগিয়ে যায়- এটাই কামনা। আমাদের লক্ষ্য, বিজ্ঞানমনস্কতা এবং মানুষকে বিজ্ঞানমুখী করা। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সবার সহযোগিতায় একসঙ্গে কাজ করতে পারলে আমরা এ যাত্রায় সফল হতে পারব। আমরা আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে ধারাবাহিকভাবে অধিকতর সফলতা পেয়েছি এবং আশা করছি, এবারও ভালো কিছু বয়ে আনতে সক্ষম হবো।
মুস্তাফিজ শফি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই একটি বিজ্ঞানমনস্ক প্রগতিশীল সমাজ গঠনে সমকাল কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, নতুন প্রজন্মকে কাজে লাগিয়েই সেটা সম্ভব। আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে এর আগেও আমাদের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে। এবারও আশা করি, সে ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দু'পর্বের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নেন চার শিক্ষার্থী। পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে আইবিওর পাঠানো ভিডিও অনুসারে জুরি, সুপারভাইজার ও প্রতিযোগীরা শপথবাক্য পাঠ করে আইবিও নির্ধারিত মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
বুয়েট ভেন্যুতে বাংলাদেশ টিমের জুরি হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক ড. রাখহরি সরকার, বিডিবিওর সাধারণ সম্পাদক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী এবং রাজশাহী ভেন্যুতে ড. মো. হাবিবুর রহমান।

রেজিস্টার্ড সুপারভাইজার হিসেবে ড. তারিক আরাফাত, সাইফ বিন সালাম, তালুকদার গালিব শাহরিয়ার, মইনুল ইসলাম খান, সামিহা সাঈদ, জিয়া হাসান, হাসান জাকির এবং রাজশাহী ভেন্যুতে মো. শাহাদাত হোসেন ও মাহদি হাসান দায়িত্ব পালন করছেন। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দুই পর্বে তত্ত্বীয় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৩১তম আইবিও চ্যালেঞ্জের অলিম্পিয়াড পরীক্ষা।
 

আজকের সাতক্ষীরা
আজকের সাতক্ষীরা